ঢাকা শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

একজন নারী উদ্যোক্তা কারিগর

আরফান হোসাইন রাফি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৪, ০৫:১৫ পিএম

একজন নারী উদ্যোক্তা কারিগর

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

‘জগতের যত বড় বড় জয়, বড় বড় অভিযান, মাতা-ভগ্নি বধূদের ত্যাগে হইয়াছে মহান।’ ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী নারী কবিতার এই চরণখানি আমরা মানি কিংবা না মানি বর্তমান যুগের আধুনিক প্রেক্ষাপটে চিরন্তন এক সত্য কথা হলো- একজন নারীর বুদ্ধিমত্তা, সাহস, ব্যক্তিত্ব, অহংকার এবং সফলতা কোনো অংশেই পুরুষের থেকে বিন্দুমাত্র কম না। বরং পুরুষদের প্রত্যেকটি সফলতার গল্পের পেছনে একজন নারীর রয়েছে অনন্য অবদান। তবে সেই অবদান কখনো স্বীকৃতি পায়নি; রয়ে গেছে পর্দার আড়ালেই! যুগে যুগে নারীরা শিকার হয়েছে বাধাবিঘ্নের। তাই এক সময়ের পরনির্ভরশীল আহলাদি কিশোরীরা আজ হয়ে উঠছে দায়িত্বশীল অদম্য নারী। প্রমাণ করতে নিজেকে বানিয়েছে উদ্যোক্তা। শুধু এখানেই থেমে নেই, বৈষম্য দূর করতে আবার কেউ কেউ হয়ে উঠছে নারী উদ্যোক্তা কারিগর। এমনই একজন অদম্য নারী চট্টগ্রামের বিবি ফাতিমা বেগম মুক্তা।

কাপড়ের ব্যবসা দিয়ে যাত্রা শুরু করে কাজ করেছেন দেশি-বিদেশি অনেক বৃহদায়তন কোম্পানিতে। তৈরি করেছেন নিজেস্ব ব্রান্ডিং প্রোডাক্ট। এভাবে আজ তিনি হয়ে উঠেছেন সফল নারী উদ্যোক্তা এবং পাশাপাশি করছেন নারী উদ্যোক্তা কারিগরি। লেটস গ্রুম বাই বিউটি অ্যান্ড ব্রেভ কোম্পানির মাধ্যমে চট্টগ্রামসহ দেশ-বিদেশে তৈরি করেছেন শত শত সফল নারী উদ্যোক্তা। দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,‘বিউটি অ্যান্ড ব্রেভ আমার প্রথম কোম্পানি যেখানে আমার যাত্রা শুরু হয় কাপড়ের ব্যবসা দিয়ে। এরপর আমি নিজেকে ভিন্ন ভিন্নভাবে আবিষ্কারের চেষ্টা করেছি। দেশ-বিদেশে বিভিন্ন জুয়েলারি ব্র্যান্ডে এবং বিজ্ঞাপনের ট্রেনার হিসেবে কাজ করেছি। এভাবে একটা সময় পর সোশ্যাল মিডিয়া এবং নারী অঙ্গনে একটা পরিচিতি লাভ করি। এরপর ২০২৩ এ শুরু করি কুইন্স বাই বিউটি অ্যান্ড ব্রেভ নামক বিউটি পার্লার ব্যবসা। যা ইতোমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামে। এ ছাড়া নারী শক্তিকে সাহস যোগাতে ২৩-এর শেষের দিকে তৈরি করেছি লেটস গ্রুম বাই বিউটি অ্যান্ড ব্রেভ। যেখানে পানচুয়েশন থেকে শুরু করে টেবিল লার্নিংসহ নারীদের পারফেক্টভাবে তৈরি হতে সাহায্য করছি। আবার ভেঙে পড়া পরনির্ভরশীল নারীদের অনুপ্রেরণা দিতে ২৪-এর শুরুর দিকে আয়োজন করেছিলাম এক বিশাল প্রোগামের। যেখান থেকে সেরা পঞ্চাশজনকে ব্রাইডাল শুট এবং সেরা দশকে বিনামূল্যে গ্রুমিং করিয়ে উপযুক্ত গাইডলাইন দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ভাবতেই ভালোলাগে আমার তৈরি অনেক মেয়েরা এখন মিস বাংলাদেশসহ দেশের সর্বোচ্চ জায়গায় বিচরণ করছে। কেউ কেউ তৈরি করেছে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান। যেখানে অনায়াসে দশ থেকে পঞ্চাশ লাখ টাকা মাসিক আয় করা সম্ভব হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, এভাবেই একদিন নারীরা পুরোপুরিভাবে পরনির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে এবং প্রমাণ করবে তারা সর্বজয়া। 

আর নতুন যারা উদ্যোক্তা হতে চায় তাদের জন্য আমার পরামর্শ থাকবে আপনারা ভয় থেকে বেরিয়ে আসুন। আধুনিকতা এখন কাজ অনেকটা সহজ করেছে, এটা নেই, ওটা নেই এমন কৈফিয়ত না দিয়ে আপনার কাছে যা আছে তা নিয়েই শুরু করুন। শুধু কাজের প্রতি লক্ষ্য রাখুন এবং অপেক্ষা করুন। সফলতা আসবেই।’
 

আরবি/ আরএফ

Link copied!