ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

বাংলাদেশের প্রথম ইউটিউব ভিলেজ

সুজন কুমার কর্মকার

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ০২:২৭ পিএম

বাংলাদেশের প্রথম ইউটিউব ভিলেজ

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের প্রথম ইউটিউব ভিলেজের সুনাম এখন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার ভেতরে অবস্থিত শিমুলিয়া গ্রাম। ২০১৯ সালের পর এরই নাম হয়ে গেছে ইউটিউব ভিলেজ। ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করা অর্থ দিয়ে এই গ্রামের সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রামের সৌন্দর্যবর্ধন এবং বিনোদনের জন্য তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ইউটিউব পার্ক। এই পার্কের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে বাঁশ-কাঠ আর খড়ের অবকাঠামো এবং ছায়া-সুনিবিড় পরিবেশ ভ্রমণপ্রিয় মানুষের মন ভুলিয়ে দেবে। প্রথম দিকে শখের বসে এটি শুরু করলেও এখন তা অনেকের আইকনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা গেছে, বিশেষ এই চ্যানেলটির নাম ‘অ্যারাউন্ড মি বিডি’।

এখানে ভিডিওর মাধ্যমে গ্রামীণ জীবন বিশেষত রান্নাবান্নাকে তুলে ধরা হচ্ছে বিশ্ব দরবারে। বেশ আয়োজন করে গ্রাম্য ধারায় শত শত মানুষের জন্য রান্না করা হয়। এ রান্নার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াই শৈল্পিকভাবে ভিডিওতে তুলে ধরা হয়। আরও জানা গেছে, ছোট্ট গ্রামটিতে নারীদের দল বেঁধে রান্না করা, গ্রামের শত শত মানুষকে বিনামূল্যে খাওয়ানো, থিমপার্ক, মানুষের ইচ্ছাপূরণ, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা করার ভিন্নধর্মী কার্যক্রমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াই ভিডিও করে ‘অ্যারাউন্ড মি বিডি’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা হয়। সেসব ভিডিও দেশ-বিদেশে ব্যাপক ভাইরাল হয়। এজন্য এই গ্রামটি এখন পৃথিবীর বহু দেশের মানুষের কাছে ‘ইউটিউব ভিলেজ’ নামে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তাই গ্রামটিকে ‘ইউটিউব গ্রাম’ বলে ডাকা হয়। রান্নাকে ঘিরেই যেন উৎসবের আমেজ নামে পুরো গ্রামে।

আয়োজন করে রান্নার পর গ্রামের শত শত মানুষকে বিনা খরচে সে খাবার খাওয়ানো হয়। এছাড়াও খোকসার শিমুলিয়ায় বাঁশ-খড়সহ গ্রামীণ জিনিসপত্র দিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি থিমপার্ক। এ পার্ক কীভাবে তৈরি করা হয়েছে, তা নিয়েও ভিডিও ছাড়া হয় ইউটিউবে। সহজ, সরল গ্রামীণ জীবনে আনন্দ দিতে গেলে নিজেদের চেষ্টায় যতটা করা সম্ভব, সবই যেন করা হচ্ছে এই ইউটিউব গ্রামে। সেখানকার নয়নাভিরাম দৃশ্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। এখানকার পরিচালক মিরাজুল ইসলাম ‘রূপালী বাংলাদেশ’র প্রতিবেদককে জানান, পৃথিবী বিখ্যাত ফুড রিভিওয়ার সানি ইউটিউবে অ্যারাউন্ড মি বিডির খোঁজ পান। সুদূর আমেরিকা থেকে তিনি বাংলাদেশে আসেন তাদের সঙ্গে দেখা করতে। তার আগমন উপলক্ষে মহিষ জবাই করে ৪ হাজার মানুষকে খাওয়ানো হয়। সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশের বিখ্যাত ফুড রিভিওয়ার আদনান ফারুক ও আরেক বিখ্যাত ফুডরিভিওয়ার রাফসান দ্য ছোটভাই। ২০১৬ সালে অ্যারাউন্ড মি বিডির কার্যক্রম শুরু করা হয়।

শুরুর দিকে আয়-উপার্জন ছিল না। পকেটের টাকা ব্যয় করে কার্যক্রম চলত। এখন দেশ-বিদেশে আমাদের চ্যানেল খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ইউটিউব থেকে এখন ভালোই উপার্জন হয়। ভবিষ্যতে আমাদের কার্যক্রমের পরিধি আরও বাড়ানোর স্বপ্ন রয়েছে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য গ্রামের মানুষের জন্য কিছু করা।

আরবি/ আরএফ

Link copied!