প্রিমিয়াম কোয়ালিটি ও উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ উফশী বালাম জাতের বোরো ধান ব্রি-১০৭। ব্রি ধান-১০৭ এর পূর্ণ বয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১০৩ সেমি। এ ধানের গড় জীবনকাল ১৪৩ দিন। যা ব্রি ধান-৫০ এর সমান। এর ডিগ পাতা প্রশস্ত, খাড়া ও লম্বা এবং পাতার রং সবুজ। প্রতি হেক্টরে গড় ফলন ৮ দশমিক ১৯ টন। তবে এটি অনুকূল পরিবেশে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টর প্রতি ৯ দশমিক ৫৭ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। পিভিটি পরীক্ষায় দশটি অঞ্চলে ব্রি ধান-১০৭ এর ফলন চেক জাত ব্রি ধান-৫০ এর চেয়ে প্রায় ১৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি পাওয়া যায়। এ ধানের গুণগতমান ভালো অর্থাৎ চালের আকৃতি অতি লম্বা চিকন (৭ দশমিক ৬ মিলিমিটার)। এ ধানের চালে অ্যামাইলোজ এবং প্রোটিনের পরিমাণ যথাক্রমে ২৯ দশমিক ১ শতাংশ এবং ১০ দশমিক ০২ শতাংশ এবং ভাত ঝরঝরে। ব্রি ধান-১০৭ এর ১০০০টি পুষ্ট ধানের ওজন ২৬ দশমিক ১ গ্রাম। এ ধানের দানার রং খড়ের মতো এবং চাল অতি চিকন ও সাদা। ব্রি ধান-১০৭ বোরো মৌসুমে দেশের প্রায় সব জেলা চাষাবাদের উপযোগী মাঝারি উঁচু থেকে উঁচু জমি এ ধান চাষের জন্য উপযুক্ত। এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রচলিত জাতের চেয়ে অনেক কম হয়।
এ জাতটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ২০১৫ সালে মাঠ থেকে সংগ্রহ করে বিশুদ্ধ লাইন বাছাইকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়। ব্রি গাজীপুরের গবেষণা মাঠে নির্বাচিত কৌলিক সারিটি তিন বছর সফল ফলন পরীক্ষণের পর ২০১৯ সালে ব্রির আঞ্চলিক কার্যালয়সমূহের গবেষণা মাঠে ও ২০২০ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন কৃষি অঞ্চলে কৃষকের মাঠে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। ২০২২ সালে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি স্থাপিত প্রস্তাবিত জাতের ফলন পরীক্ষায় (পিভিটি) সন্তোষজনক হওয়ায় জাতীয় বীজ বোর্ডের মাঠ মূল্যায়ন দলের সুপারিশের ভিত্তিতে জাতটি ছাড়করণের জন্য আবেদন করা হয়। জাতীয় বীজ বোর্ডের ১১১তম সভায় সারা দেশে চাষের জন্য বালাম জাতের বোরো ধান হিসেবে লতা বালামকে ব্রি ধান ১০৭ হিসেবে অনুমোদন দেয়।
তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট
আপনার মতামত লিখুন :