ফুল শুদ্ধতা, সৌন্দর্য ও আবেগের প্রতীক। পৃথিবীর সব শুভ ক্ষেত্রেই রয়েছে ফুলের ব্যবহার। তাই অভ্যর্থনা, বিশেষ অনুষ্ঠান কিংবা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানেও এর ব্যবহার লক্ষণীয়। সনাতন শাস্ত্র মতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণের সুনির্দিষ্ট বিধি। তাই প্রতিদিনের পূজার ন্যায় তাদের সবচেয়ে বড় মহোৎসব দুর্গাপূজায়ও রয়েছে ফুলের ব্যবহার। জ্যোতিষ অনুযায়ী জবা, গোলাপ এবং কনের প্রজাতির সমস্ত ফুলই দুর্গা পূজায় অর্পণ করা হয়। কিন্তু সে ফুল সংগ্রহে পোহাতে হয় মহা ঝামেলা। কখনো বাজারে এসব ফুলের সংকট আবার কখনো চড়া দাম! যার কারণে অনেক সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পড়তে হয় বিপাকে। তাই মাধবদী শ্রী শ্রী লোকনাথ মন্দিরের পুরোহিত সজল কর্তা দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের মাধ্যমে পরামর্শ দেন যেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নিজেই চাষ করেন পূজার ফুল। এতে মন এবং পরিবেশ দুটোই প্রফুল্ল থাকবে থাকবে বলে তিনি মনে করেন।
চাষের উপকরণ ও স্থান নির্বাচন
যদি আপনি নিজেই পূজার ফুল চাষ করতে পারেন, হয়তো এটি আপনার পূজা অনুষ্ঠানে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে। তাছাড়া নিজের হাতে চাষ করা ফুল ব্যবহার করলে সেটি পূজাকে আরও বিশেষ করে তুলবে। ফুল চাষের জন্য প্রথমে উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে। ফুলের জন্য সূর্যলাভজনক স্থানে ভূমি নির্বাচন করুন, যেখানে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল এবং সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারবে। তবে মাটির মানও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, রেডি টো প্লান্ট মাটি বা কম্পোস্টযুক্ত মাটি ফুল চাষের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী।
উপযুক্ত ফুলের প্রজাতি নির্বাচন
চাষের উপকরণ ও স্থান নির্বাচনের পর উপযুক্ত ফুলের প্রজাতি নির্বাচন করতে হবে। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ফুলের প্রজাতি নির্বাচন করতে পারেন।
চাষের প্রক্রিয়া
ফুল চাষের জন্য কিছু নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। তাই ফুল চাষে নিচের প্রক্রিয়া ব্যবহার করতে পারেন।
বীজ বপন: ফুলের বীজ মাটিতে সঠিক গভীরতায় বপন করুন। সাধারণত ১-২ সেন্টিমিটার গভীরতা যথেষ্ট।
জল দেওয়া: মাটির আদ্রতা বজায় রাখত নিয়মিত জল দেওয়া নিশ্চিত করুন, বিশেষ করে গরমের সময় ।
সার প্রয়োগ: ফুল গাছের বৃদ্ধির জন্য প্রতি মাসে একটি ভালো সার ব্যবহার করুন। কম্পোস্ট বা জৈব সার ব্যবহার করা ভালো।
পোকামাকড় ও রোগ নিয়ন্ত্রণ: ফুলের গাছে যদি পোকামাকড় দেখা দেয়, তাহলে জৈব পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করুন। কীটনাশক ব্যবহার করতে হলে সতর্কতা অবলম্বন করুন। প্রয়োজনে কৃষিবিদের পরামর্শ নিন।
পরিচর্যা ও ফলন
ফুল চাষে পরিচর্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ফুল গাছগুলোর প্রতি নিয়মিত নজর রাখতে হবে। পাতা শুকিয়ে গেলে বা মরে গেলে তা কেটে ফেলতে হবে। ফুল ধরার সময়, নিয়মিত পানির ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত আলো প্রদান করতে হবে এবং ফুল তোলার সময় সাবধানতার সঙ্গে তাদের মূল অংশে হাত দিতে হবে যেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এভাবেই মানসিক প্রশান্তি পেতে নিজেই চাষ করতে পারেন পূজার ফুল।
আপনার মতামত লিখুন :