সাকিব মাহমুদ, পড়াশোনা করেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষে। ইলেকট্রিক্যালে পড়াশোনা করলেও নিজের ভালো লাগা খুঁজে নিয়েছেন ইলেকট্রনিক থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এক জগৎ ফটোগ্রাফিতে। নিজের পড়াশোনার বিষয় ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রপাতির চেয়ে ক্যামেরার লেন্সই যেন বেশি আপন সাকিবের কাছে। করোনা ভাইরাস মহামারির পর ২০২২ সালে হাবিপ্রবির ইইই বিভাগে ভর্তির আগ পর্যন্তও ছবি তোলার বিষয়ে সাকিবের তেমন আগ্রহ ছিল না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর নিতান্ত শখের বসেই নিজের ফোনে ছবি তুলতেন। বিভিন্ন ছবি তুলতে তুলতে ছবি তোলার কাজটা তার ভালো লেগে যায়। একসময় এই ভালো লাগা তৈরি হয় শখের কাজে। এ বিষয়ে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এমনিতেই নিজের ফোন দিয়ে নানারকম ছবি তুলতাম ভালো লাগা থেকেই। তখনো ফটোগ্রাফি করব বা এরকম কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তবে ছবি তুলতে তুলতে আমার এ কাজটাকে ভালো লাগতে শুরু করে। একসময় ছবি তোলা আমার শখে পরিণত হয়। আমি প্রতিদিন নিয়ম করে নানা রকম ছবি তোলা শুরু করি। সেই থেকে চলছে আমার ছবি তোলা।
তারপর আমি ফেসবুকে ‘তালব্য শ-ছবিকথা’ নামক একটা পেজ খুলি। নিজের মতো করে ছবি তুলতে থাকি এবং পেজে তা আপলোড করি। ছবির পাশাপাশি আমি ভিডিও করাও শুরু করি। এভাবেই চলছিল। হঠাৎ একদিন একটা কাজের অফার আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ ব্যাচের এক আপু আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে কাপল ফটোশুট করে দেওয়ার জন্য। তখন আমার ক্যামেরাও ছিল না। আমি এক বড় ভাইয়ের ক্যামেরা ধার করে কাজটা করি। ফটোগ্রাফি করে সেটাই ছিল প্রথম পারিশ্রমিক পাওয়া। এরপর আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। তারপর গত এক বছর থেকে এভাবেই চলছে। এই এক বছরে আরও অনেক কাজ পেয়েছি। পারিশ্রমিক যেমন পেয়েছি, তার চেয়ে বেশি আমি তা উপভোগ করেছি।
যখন আমি বুঝতে পারি ছবি তোলা আমার প্যাশন তখন আমি বড় পরিসরে কাজ করার পরিকল্পনা করি। ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সঙ্গে যুক্ত হই। গত ছয় মাস আগে কিনে ফেলি নিজের ক্যামেরা। ক্যামেরা কিনতে বাসা থেকে কিছু টাকা নিই, সঙ্গে আমার কিছু জমানো টাকা ছিল, তা যোগ করি। এরপর আমি পুরোদমে কাজ করা শুরু করি, আমার একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি। তবে এ কাজ শুরু করতে সবকিছু এত সহজ ছিল না। একাডেমিক পড়াশোনা বাদ দিয়ে ছবি তোলার পেছনে সময় নষ্ট এটা পরিবার মানতে চায়নি। প্রথমে পরিবারকে মানাতে একটু কষ্ট হয়েছিল। ছবি তোলা তেমন পছন্দ ছিল না তাদের। তবে আমার মা আমাকে যথেষ্ট সাপোর্ট দিয়েছিল। মাকে বোঝানোর পর আর তেমন সমস্যা হয়নি। এখন সবাই যথেষ্ট সাপোর্টিভ আমার এ কাজ। এখন পারিশ্রমিকের বিনিময়ে নিয়মিতই কাজ করা হয়। তবে এখনো ফটোগ্রাফিকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেব কি না, তা ঠিক করিনি। কাজ করতে ভালো লাগছে, তাই এসব না ভেবে করে যাচ্ছি।
হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
আপনার মতামত লিখুন :