সেপ্টেম্বর শেষ; অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে শীত। এই শীতে ঘরের ছোট শিশুদের হরহামেশা ঠান্ডা-জ্বর-কাশি লেগেই থাকে। এই ঠান্ডার রোগ বালাই থেকে বাচতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে কিছু পরামর্শ রুপালী বাংলাদেশের পাঠকের কাছে তুলে ধরা হলো-
শীতের প্রভাবে শিশুদেরও উপর পরবে। এসময় সহজে নানা ধরণের রোগে আক্রান্ত হবে শিশুরা। শিশু বিশেষজ্ঞ বলেন, শীতের সময় দেখা যায় যে শিশুরা পোশাক ঠিকমতো পড়তে চায় না। কান হয়তো বাইরে থাকে। ঠান্ডা পানি খায়। ফলে রোগাক্রান্ত হয়ে যেতে পারে সহজে। আবার অনেক শিশুরা ঠান্ডা বাতাসের সঙ্গে খাপ-খাওয়াতে পারে না। তাই ঠান্ডা লাগে সহজে আর টনসিল ফুলে যায়।
কী কী রোগ হয়?
- নিউমোনিয়া
- ডায়রিয়া
- গ্যাসট্রোএনটারাইটিস বা খাবারে বিষক্রিয়া
- অ্যাজমা, আগে থেকে থাকলে এসময় সেটা আবার অ্যাটাক হয়
- টনসিলাইটিস
- প্যারোটাইটিস বা মামস
- ইনফ্লুয়েঞ্জা
- যেসব শিশুর এ্যালার্জি থাকে তাদের শ্বাসকষ্ট হয়
প্রতিকার কী?
- প্রথম যেটি করতে হবে, তা হল শিশুদের গরম রাখতে হবে। ঘরের পরিবেশ গরম রাখতে হবে।
- শিশুদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। শিশুদের ঠাণ্ডা লেগে গেলে অনেক সময় শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এসময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন নাক বন্ধ হয়ে না থাকে। নাক-মুখ ভাল ভাবে পরিষ্কার রাখতে হবে।
- একটা বাচ্চা অসুস্থ হলে তাকে অন্য বাচ্চাদের থেকে একটু সরিয়ে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
- এ ছাড়া পরিবারের অন্যদের রোগ হলে শিশুদের সামনে আসার সময় অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।
- বাচ্চাদের উষ্ণ গরম পানি খাওয়াতে হবে।
প্রতিদিন গোসল না দিয়ে দু-তিন দিন পর পর গোসল করাতে হবে এবং উষ্ণ গরম পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে। - শিশুরা বাইরে বের হলে পুরো শরীরের সাথে সাথে কান ঢাকতে হবে। টুপি, হাত ও পা মোজা পড়াতে হবে যাতে বাতাস না লাগে।
- বাইরের খাবার খাওয়ানো যাবে না।
- অনেকেই ধূমপান ক্ষতিকর জেনেও শিশুদের সামনে বিড়ি/সিগারেট পান করেন। এটা মোটেও উচিত নয়। এতে শিশুদের অ্যাজমার সমস্যা বেড়ে যাওয়া আশঙ্কা থাকে।
কখন চিকিৎসকের কাছে নেবেন?
- শিশুদের মধ্যে নির্দিষ্ট ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে তাদেরকে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। সেগুলো হল—
- শিশু যদি খাওয়া কমিয়ে দেয়
- প্রস্রাব যদি কমে যায়
- ত্বকে বা অন্য কোথায় ব্লিস্টার বা চর্মরোগ দেখা দিলে
- বাচ্চার ডায়রিয়া হলে যদি পানি শূন্যতা দেখা দেয়
- উচ্চ মাত্রায় জ্বর অর্থাৎ তাপমাত্রা যদি ১০০ বা ১০১ থাকে এবং সেটা না কমে
- শ্বাস কষ্ট দেখা দেয় এবং এর জন্য শিশু ঘুমাতে না পারলে
- অতিরিক্ত বমি করলে
- শিশু যদি নেতিয়ে পড়ে বা দুর্বল হয়ে যায়
- শিশু মায়ের বুকের দুধ টেনে খেতে না পারলে
- শিশুর যদি যেকোন কারণে খিচুনি হয়
- এসব লক্ষণ দেখা দিলে শিশুকে কোনভাবেই বাসায় রাখা যাবে না। সাথে সাথে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
নবজাতকদের যত্ন কেমন হবে?
আদি যুগের মতো আতুর ঘরের মতো এখনও নবজাতকদের একটু আলাদা করে রেখে বাড়তি যত্ন নেওয়ার কথা বলেন চিকিৎসকরা। নবজাতকদের গরম পরিবেশে এবং জীবাণুমুক্ত অবস্থায় রাখতে হবে। যেসব শিশু অপরিপক্ব অবস্থায় জন্ম নেয় তাদের দিকে আরও বেশি খেয়াল রাখতে হবে। শীতকালে সূর্যালোকে কম থাকে বলে; তাদের রোদে রাখতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে, শিশু যাতে হলুদ হয়ে না যায়।
আপনার মতামত লিখুন :