জাপানের সাইতো শহরে অবস্থিত হিৎসুজিয়ামা পার্ক যেন প্রকৃতির এক অনন্য নিদর্শন। পাহাড়, ফুল, পাখি এবং প্রাকৃতিক দৃশ্যের মিশেলে এখানে পাওয়া যায় নৈসর্গিক প্রশান্তি। ধারণা করা হয়, হিৎসুজিয়ামা পাহাড়ের পাদদেশে পার্কটির অবস্থান হওয়ায় এর নামেই পার্কটির নামকরণ করা হয়। এই পার্কটি পরিপূর্ণভাবে প্রকৃতির সৌন্দর্য ও জাপানি সংস্কৃতির ঐতিহ্য একত্রিত করে এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতার জোগান দেয়।
পাহাড়টির উঁচু শীর্ষ থেকে পুরো পার্ক এবং আশপাশের অঞ্চলের মনোরম দৃশ্য ভ্রমণপ্রেমীদের মুগ্ধ করে। পার্কের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পথ, সিঁড়ি এবং পিকনিক স্পট রয়েছে। শীতকালে পাহাড়ে তুষারের আস্তরণ পরলে, এটি আরও এক রহস্যময় এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করে। তবে এই পার্কের বিশেষ আকর্ষণ হলো কুসুম বা চেরিফুলের গাছ, যা বসন্তকালে পার্কের সৌন্দর্যকে অনেকগুণ বৃদ্ধি করে। পার্কের নানা অংশে সাদা, গোলাপি এবং লাল রঙের চেরি ব্লসম গাছের মেলা দেখতে প্রায়ই হিড়িক পড়ে দর্শনার্থীদের। এ ছাড়াও, পার্কে অন্য ঋতুভিত্তিক ফুল যেমন- গোলাপ, স্যাকুরা, অজুরা, তমাগাওসহ নানা ধরনের বুনো ফুলও দেখতে পাওয়া যায়, যা পার্কের পরিবেশকে আরও রঙিন এবং জীবনমুখী করে তোলে। ফুল ছাড়াও এই পার্কে পাখিদের বিচরণও একটি বিশেষ আকর্ষণ। বিশেষ করে, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে এখানে নানা ধরনের পাখির দেখা মেলে। পার্কের প্রশস্ত সবুজ মাঠে পাখিরা মুক্তভাবে উড়ে বেড়ায়, তাদের মিষ্টি গান পরিবেশন করে। সে গানে গলা মেলাতে মাঝে মাঝে এখানে কিছু বিরল প্রজাতির পাখিদেরও দেখা মেলে। তাই প্রকৃতির এই অমূল্য দৃশ্যে সময় কাটাতে বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা। আপনিও চাইলে ব্যস্ততার ফাঁকে সময় করে ঘুরে আসতে পারেন ফুল ও পাখিদের এই পাহাড়ে।
যেভাবে যাবেন: যদি আপনার ব্যক্তিগত গাড়ি থাকে বা গাড়ি ভাড়া নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন, তাহলে হিৎসুজিয়ামা পার্কে যাওয়ার জন্য ন্যাশনাল হাইওয়ে ব্যবহার করতে পারেন। হাগুরো শহরের কেন্দ্র থেকে পার্কটির দূরত্ব ১০-১৫ মিনিটের পথ। অথবা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বাস বা ট্রেনে করেও হিৎসুজিয়ামা পার্কে যাওয়া যায়। এক্ষেত্রে প্রথমে স্থানীয় ট্রেনে করে হাগুরো শহরে যেতে হবে। সেখান থেকে জাপানের শিঙ্গেন ট্রেনের মাধ্যমে বিভিন্ন শহর থেকে সহজে হাগুরোতে যাওয়া যায়। তারপর হাগুরো স্টেশন থেকে আপনি স্থানীয় বাস বা ট্যাক্সি নিয়ে পার্কে যেতে পারেন।
আপনার মতামত লিখুন :