ব্যাচেলরদের কেউ কেউ শেয়ার করে মেসে থাকে। কেউ বা একাই ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকে। আলাদা এক বা দুই রুম নিয়ে। খুব কমই তারা রুম শেয়ার করে। তারা বুয়া রাখে। কেউ কেউ নিজেরা রান্না করে খায়। এই শ্রেণির ব্যাচেলর একটু সৃজনশীলও হয়। একা একা থাকে বলে অনেকে গিটার শেখা, ফ্রিল্যান্সিং করা, আর্ট, লেখালেখিতে বেশি ঝুঁকে পড়ে। অনেকেই সফল হয়।
জীবনের ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে ঢাকায় এসে বসবাস করছেন বরিশালের রামারপোল গ্রামের ছেলে রুহুল আমিন ভূঁইয়া, পেশায় গণমাধ্যম কর্মী। রুহুল বেশিরভাগ একাই থাকেন বাসায়। মাঝে মাঝে কিছু বন্ধুবান্ধব আসে, তাদের সঙ্গে রান্না করে খাওয়া, গল্প আড্ডা দেন। একা বাসার নীরবতা তিনি অনুভব করেন; কারণ তার লেখালেখির কাজই বেশি। বাজার করেন। রান্না নিজেই করেন। রান্না করতে মন না চাইলে অনলাইনে অর্ডার দেন বা হোটেল থেকে খেয়ে আসেন। বুয়া এসে শুধু কাপড় ধুয়ে ঘর ঝাড়ু দিয়ে যায়। রুহুল সারাদিন বাইরে থাকেন। সন্ধ্যা বা রাতে বাসায় ফিরেন। পত্রিকার কাজ করার কারণে সারাদিন ছোটাছুটি করেন।
রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা যারা ক্রিয়েটিভ কাজে জড়িত, তারা একা থাকতে পছন্দ করি। কারণ, সারাক্ষণ ক্রিয়েটিভ ভাবনাই আমাদের মূল কাজ। আমরা চাইলেও রুম শেয়ার করতে পারি না। ধরুন, কোনো একটি লেখার বিষয় মগজে ঘুরপাক খাচ্ছে। এর মধ্যে কখন দিন পেরিয়ে রাত হয়েছে। তার হিসাব নেই। রাত ২টা। আলো জ্বালিয়ে লিখছি। আমার সঙ্গে অন্য কেউ থাকলে এই বিষয়টি মানতে হয়ত পারত না। রাতে হয়তো তার আলো বন্ধ রাখলে ঘুম ভালো হয়। অথবা আমার রুমমেট এমন কোনো এবটি কাজ করছে। যা আমার লেখার কাজে ডিস্টার্ব করছে। তাই একা থাকাই ভালো। এদিকে সারাদিন আমাদের নানা রকমের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। তাই দিনশেষে বাসায় ফিরে একটু স্বস্তি চাই। ক্লান্তি দূর করতে চাই। অন্যদিকে ছুটির দিনগুলোতে বাসায় বন্ধু-বান্ধব এসে আড্ডা দিলে নিজের মতো করে দেওয়া যায়। রুমমেট হয়ত এই বিষয়টি পছন্দ নাও করতে পারে। দেখা যেত তার পরীক্ষার প্রস্তুতি আছে। আমাদের হৈ-হুল্লোড় তার ভালো না লাগতে পারত। এটিও একটি কারণ। আমার নিজের আলাদা বাসা থাকাতে অবসর সময় লেখালেখি, গান শুনে ও বই পড়ে পার করি।’
বিয়ের প্রসঙ্গ আসতেই তিনি বলেন, এই প্রশ্ন অনেকেই করে। পড়ালেখা শেষ। চাকরি করছি। তাই বিয়ে দেওয়ার জন্য অনেকেই উঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু বিয়ে তো আমার হাতে না। সময় সুযোগ মিললেই বিয়ে হবে। আপতত আমি ব্যাচেলর।
আপনার মতামত লিখুন :