মানুষকে নির্মল আনন্দ আর বিনোদন দিয়ে মাত্র ৭ বছরেই মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে ঝিনাইদহের জোহান ড্রিমভ্যালি রিসোর্ট। ঝিনাইদহ শহর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার পশ্চিমে ঝিনাইদহ- চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের পাশে জাড়গ্রামে ২০১৮ সালের প্রথমদিকে ২৫ একরে জমির ওপর স্থাপিত রিসোর্টটির আয়তন বেড়ে এখন ৩৫ একর। প্রাকৃতিক পরিবেশে চারিদিকে নানারঙের ফুলেঘেরা এবং সমুদ্রসৈকতের আদলে তৈরি ওয়াটার কিংডম বা ওয়েভপুল, রোলার কেস্টার, কেইভ ট্রেন, পাইরেটস্ শিপ, ফ্রিজবি, টোরাটোরা, জেটকোস্টার, পা-চালিত নৌকা বা পেডেল বোট, মেরি গো রাউন্ড, নাগরদোলা সুইং চেয়ারের মতো আধুনিক রাইডিং আর ভূতেরবাড়ি মন কেড়ে নিয়েছে শিশু-কিশোর ও যেকোনো বয়সের নারী-পুরুষের।
রাইডিংয়ের পাশাপাশি ৩০টি ভিআইপি পিকনিক স্পটসহ ১০০টি পিকনিক কর্নার, আন্তর্জাতিক মানের রাইডস জোন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য সুবিশাল স্টেজ ও খেলার মাঠ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কমিউনিটি সেন্টার ও কনফারেন্স রুম, আবাসন সুবিধা ও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এ রিসোর্টে একসঙ্গে ১৪ হাজারের মতো দর্শনার্থী উপভোগ করতে পারেন। খুলনা বিভাগের সর্ববৃহৎ রিসোর্ট হিসেবে বিবেচিত জোহান ড্রিমভ্যালি রিসোর্টকে বিভাগীয় পর্যায়ে রাজস্ব জমাদানে একাধিকবার পুরস্কৃত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। বিভাগীয় পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ রিসোর্টটি আগামী বছরের মধ্যেই জাতীয় পর্যায়ের ৫টি রিসোর্টের একটি হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন রিসোর্টের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে বেড়াতে এসেছিলেন কলেজছাত্রী নুসরাত জাহান, শ্রেয়া বিশ্বাস ও ছারওয়ার জামান। তারা জানালেন, জোহানের স্পিডবোট, পায়েচালিত বোট ও অন্যসব রাইডারই অতি আধুনিক। ওদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বেশ সহায়ক। একবারেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যঘেরা পরিবেশে ফুলফুলে আচ্ছাদিত রিসোর্টটি সহজেই নজর কাড়ে। তাছাড়া, সুবিশাল খেলারমাঠ ও সভাস্থলগুলো এতই বিশাল যে একদিনে সহজে ঘুরে শেষ করা যায় না।
রাজবাড়ির পাংশা ও ফরিদপুর থেকে এসেছিলেন সরকারি রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। শমি খাতুন, নাহিদা আক্তার ও রমজান খান জানালেন, জোহানের ভূতেরবাড়ি বলে নামের যে বিনোদন স্পট রয়েছে, তা মনে হয় একেবারেই জীবন্ত। অনুসন্ধিৎসু শিক্ষার্থীদের জন্য বিনোদনটি শিক্ষার বড় একটা মাধ্যম বলে তারা মনে করেন।
মেহেরপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অনার্স বিভাগের শিক্ষার্থী কাজি অনুপম, রাজিব মাহবুব, শশী বালা অধিকারি ও শামসুল হক জানালেন, ওয়াটার কিংডম নামে যে কৃত্রিম সমুদ্রসৈকত তৈরি করা হয়েছে তা একবারেই হৃদয়ছোঁয়া। সৈকতের ঢেউগুলো মনে হয় একবারইে জীবন্ত। এটি দেখে অনুভূত হবে যে, দর্শনার্থীরা কুয়াকাটা বা কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে আছেন। তাদের কেউ কেউ আবার মনে করেন, শিক্ষার্থীদের জন্য সবধরনের রাইডারের মূল্যহার কমালে তাদের সংখ্যা বাড়বে, রিসোর্টটি আরও জনপ্রিয় হবে।
জোহান ড্রিমভ্যালি রিসোর্টের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানালেন, তার রিসোর্টের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা। তার মতে, আসছে বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের মধ্যে তিনি রিসোর্টটি বিশ্বমানের পর্যায়ে নিয়ে যাবার জন্য ফরেস্ট ভ্যালি স্থাপন করে সেখানে হরিণ বা ওই জাতীয় প্রাণির চলাচল নিশ্চিত করবেন, বিশাল জলাকারে বিদেশি ও রঙিন মাছ ছেড়ে দর্শনার্থীদের বেশি বেশি আনন্দ দেবেন, বনে ছাড়বেন বিভিন্ন প্রজাতির পাখপাখালিও। বর্তমানে খুলনা বিভাগের সর্ববৃহৎ রিসোর্টটি আগামী এক বছরের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ের ৫টি রিসোর্টের একটিতে পরিণত হবে বলে বিশ্বাস করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন।
আপনার মতামত লিখুন :