ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

কমছে পানি বাড়ছে নদী ভাঙন

মিজানুর রহমান মিজান

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪, ১২:০০ পিএম

কমছে পানি বাড়ছে নদী ভাঙন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

‘ধানের দেশ গানের দেশ তেরোশত নদীর দেশ,বাংলাদেশ!‍‍`সৈয়দ শামসুল হকের এই কবিতা যেন বাংলাদেশের মানুষের একটা জীবন মানচিত্র। যদিও উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে গেছে দেশের চিত্র,তবু নদীমাতৃক এই দেশে অববাহিকা, ঐতিহ্য, সামাজিকতা, সংস্কৃতি আজও নদীময়। এখনও অনেক গ্রামে নদীকে ঘিরেই স্বপ্ন আঁকেন বহু মানুষ। উত্তরের জেলা গাইবান্ধার  সাঘাটা তেমনই একটি গ্রাম। যাদের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস কৃষি হলেও ব্রহ্মপুত্র ও যমুনাকে ঘিরে বাস্তবায়িত হয় এর ফলন। কিন্তু জোয়ার-ভাটার নির্মম পরিহাস ক্রমেই ধ্বংস করে দিচ্ছে এই এলাকার মানুষের জীবন।

কখনো পানির ঊর্ধ্বগতি আমার কখনো নিম্নগতি ধূলিসাৎ করে দিচ্ছে ফসলি জমি থেকে শুরে করে মাথা গোঁজার ঠিকানা। বর্ষাকাল শেষ হয়ে শরৎকাল চলে এসেছে। কমতে শুরু করছে দেশের নদীগুলোর পানি। জানা যায়, ঋতু বৈচিত্রের প্রভাবে গাইবান্ধার সাঘাটা  উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর পানি কমে গেছে যার ফলে বেড়ে গেছে নদী ভাঙন। গত কয়েক দিনে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার দুইটি গ্রামের  প্রায় চার শতাধিক ঘরবাড়ি, অসংখ্য গাছপালা ও  ৪০/৫০ একর জমি বিলীন হয়ে গেছে। নিরুপায় হয়ে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে,অন্যের জায়গায় এবং সরকারি বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে ভাঙন এলাকার মানুষজন।

এ বিষয়ে দক্ষিণ দীঘলকান্দী এলাকার কৃষক মো: হাসান রহমান জানান, ‍‍`নদী ভাঙনে তার দুটি ঘর নদী গর্ভে চলে গেছে। প্রতি বছরই এসব দুর্যোগের সম্মুখীন হয় এই এলাকার মানুষ। সরকারি ভাবে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায় না । যদি নদী খননের ব্যবস্থা নেয়া হতো তাহলে তাদের বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদী গর্ভে ভেঙে যেতো না।‍‍`

একই গ্রামের কৃষক তাহের আলী বলেন, "হামার তিন মাসের মধ্যে ৪ বার  ঘর ভেঙে গেছে এবং বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে থাকতে হইছে । নদী ভাঙনের জন্যে এবার হামরা অন্যের জায়গায় বসবাস করতেছি । এভাবে ভাঙতে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে গোটা গ্রাম নদী গর্ভে তলিয়ে যাবে। হামার চারটি টিনের তৈরি ঘর কয়েক দিনের মধ্যে নদীগর্ভে চলে যায়। কয়েক দিন থেকে এক আত্মীয়ের জায়গায় ঘর তুলে আছি।"

এমন বিপন্ন জীবন থেকে মুক্তি পেতে ভাঙন রোধে সরকারি ভাবে দ্রত খননের ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান এলাকাবাসি। একমাত্র ভাঙন রোধের ব্যবস্থা নেয়ার মাধ্যমেই বেঁচে যেতে পারে এলাকার মানুষ,সাথে ফসলি জমি,বাংলার ঐতিহ্য কিংবা সংস্কৃতি।

আরবি/জেআই

Link copied!