পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেই আপনি ভালো একটা চাকরি পাবেন কিংবা সব সাফল্য অর্জন করে ফেলবেন এমন ধারণা থেকে বেড়িয়ে আসুন। পাবলিক মানেই সব নয়! বর্তমান চাকরির বাজার প্রতিযোগিতামূলক। এখানে মেধার পাশাপাশি দরকার যথাযথ দক্ষতা। আর বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা একটা স্ক্যাম, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এর বাইরে নয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে যেভাবে রংচং মাখিয়ে বলা হয়, বাস্তবটা তার বিপরীত। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে কিছু মৌলিক পার্থক্য থাকলেও শিক্ষার কাঠামো একই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা কোনো কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ না পেলে হতাশায় নিমজ্জিত হয়। তারা নিজেদের জীবনকে তুচ্ছ মনে করে, তাদের জীবনে কোনো সাফল্য আসবে না, এসব ভ্রান্ত ধারণা। পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যায়, উপযুক্ত দক্ষতা না থাকার কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া হাজার হাজার শিক্ষার্থী বেকার আছে। যে বিষয়ে পারদর্শী, যে বিষয়ে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারলে চাকরি জীবনে সফল হতে পারবেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এ ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না। বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। ভবিষ্যৎ জীবনে সফলতা অর্জন করতে হলে পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের স্কিল বাড়াতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়তো আপনার একটা উচ্চমানের পরিচয় বহন করবে, কিন্তু ক্যারিয়ারে সাফল্য অর্জনে আপনার দক্ষতাই মুখ্য বিষয়। তাই যে যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুক না কেন পড়াশোনার পাশাপাশি সবারই উচিত দক্ষতা অর্জন করা।
শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি স্কিল বাড়ানোর জন্য নিচে ১০টি কার্যকর উপায় তুলে ধরা হলো-
অনলাইন কোর্স এবং ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ
অনেক ওয়েবসাইট যেমন, ঈড়ঁৎংবৎধ, টফবসু, বফঢ ইত্যাদিতে বিভিন্ন স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্স রয়েছে। শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের বিষয়ে কোর্স করে দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা
শিক্ষার্থীরা লেখালেখি, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বা অন্যান্য সৃজনশীল কাজ ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম যেমন টঢ়ড়িৎশ, ঋরাবৎৎ-এ কাজ করে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।
ইন্টার্নশিপ করা
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করে শিক্ষার্থীরা বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারে। এটি তাদের স্কিল বাড়ানোর পাশাপাশি ক্যারিয়ারের জন্য সহায়ক হতে পারে।
গ্রুপ ডিসকাশন এবং ডিবেট
শিক্ষার্থীরা ক্লাসের বাইরে বন্ধুদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা বা ডিবেট করলে তাদের চিন্তাভাবনা ও যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
বুক রিডিং এবং পডকাস্ট শোনা
বিভিন্ন ধরনের বই পড়া বা পডকাস্ট শোনা শিক্ষার্থীদের জ্ঞান এবং সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে আত্মোন্নয়ন এবং ব্যবসায়িক বই তাদের স্কিল বাড়াতে সাহায্য করে।
ভলান্টিয়ার কাজ করা
বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করলে নেতৃত্ব, টিম ম্যানেজমেন্ট এবং সমন্বয়ের দক্ষতা বাড়ে। এ ধরনের কাজগুলো মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে সাহায্য করে।
নিজস্ব ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেল শুরু করা
নিজের আগ্রহের বিষয়ে ব্লগ লেখা বা ইউটিউব চ্যানেল শুরু করে শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ, কনটেন্ট ক্রিয়েশন এবং মার্কেটিংয়ের দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
কোডিং বা প্রোগ্রামিং শেখা
বর্তমানে কোডিং একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্কিল। শিক্ষার্থীরা অনলাইনে কোডিং শেখার মাধ্যমে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডিজাইন, এবং ডেটা সায়েন্সে দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাক্টিভ থাকা
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, কনটেন্ট ক্রিয়েশন এবং ব্র্যান্ড বিল্ডিংয়ের জন্য শিক্ষার্থীরা সোশ্যাল মিডিয়াতে অ্যাক্টিভ থাকতে পারে। এটি তাদের ডিজিটাল স্কিল উন্নত করতে সহায়ক।
টিউটরিং বা শেখানো
শিক্ষার্থীরা ছোটদের পড়ানোর মাধ্যমে তাদেরও শেখানোর দক্ষতা এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারে। এটি শিক্ষার্থীদের নিজস্ব বিষয় সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জনেও সহায়তা করে।
ইয়াছিন ইসলাম
শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
আপনার মতামত লিখুন :