কথায় আছে, মন ভালো থাকলে শরীরও ভালো থাকে। আর মন খারাপ থাকলে কিছুই ভালো লাগে না। মন ভালো নেই শিরোনামে একটি গানের কথা মস্তিষ্কে খেলা করছে। এই মন খারাপের সময়টাকে উড়িয়ে দিতে অনেকেই অনেকে কিছু করেন। কেউ ছবি আঁকেন, কেউ নাচেন, কেউ খেলেন, কেউ আবার গান শোনেন বা চেতন-অবচেতনে গাইতে শুরু করেন।
গবেষণা বলে, গান মস্তিষ্ককে ডোপামিন নিঃসরণ করতে উদ্দীপিত করে। ডোপামিন আনন্দ ও প্রাপ্তির অনুভূতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। ফলে মনমেজাজ ভালো করে, মানসিক চাপ কমে। গান মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। সারা দিনের কাজের চাপ ও মানসিক অশান্তির কারণে অনেকেই প্রচণ্ড মানসিক চাপে ভোগেন। অথচ খুব সহজেই এই মানসিক চাপ দূর করে দিতে পারে সুন্দর একটি গান। এ পর্যন্ত বহু গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, গান মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক। বিজ্ঞানীরা বলেন, গান শোনা মানসিক চাপ ও ব্যথা কমাতে সহযোগিতা করে। ২০২০ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৫৭ শতাংশ মার্কিন নাগরিক বলেছেন টিভি দেখা, শরীরচর্চা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার বা ভিডিও গেম খেলার চেয়ে সংগীত মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। অ্যামেরিকা সাইক্রিয়াটিক অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য মিউজিক থেরাপি অনেক কার্যকর ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন গবেষণা থেকে এই বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। এবার জেনে নেওয়া যাক, গান কীভাবে মানসিক চাপ কমায়?
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ধীরলয়ের সুন্দর একটি গান মনোযোগ দিয়ে শুনলে শরীরে শিথিলতা অনুভূত হয় এবং বুক ধড়ফড় করা বা মানসিক অস্থিরতা বা চাপ কমে যায় ধীরে ধীরে। সঙ্গে বাড়ে মস্তিষ্কের সক্রিয়তা। সেই সঙ্গে যদি হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করা যায়, তাহলে মানসিক চাপ চলে যাবে পুরোপুরি। সুন্দর একটি গান হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি হরমোনও নিঃসরণ করে। ভালো একটি গান শরীরে সেরোটনিন নামের একটি হরমোন নিঃসরণে সাহায্য করে, যা ভালো লাগার অনুভূতি সৃষ্টিসহ মানসিক চাপ কমিয়ে মনটাকে ফুরফুরে করে দেয়। সেই সঙ্গে দুশ্চিন্তাও কমে যায় একেবারে।
তিনি আরও বলেন, একটি সুন্দর গানের প্রভাব পুরো শরীরের পাশাপাশি মস্তিষ্কেও পড়ে। মানসিক চাপ অনেক বেশি থাকলে কিছুক্ষণ সুন্দর কোনো গান শুনুন। এতে মানসিক চাপ চলে যাবে একেবারেই। গান শোনার পাশাপাশি মানসিক চাপ কমাতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিলে কথা বললে এবং ঘুরতে গেলেও মানসিক চাপ কমে যায়।
আপনার মতামত লিখুন :