ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
আজেনহাস ডো মার

সমুদ্র যেখানে প্রতিবেশী

আরফান হোসাইন রাফি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২৪, ০২:৫৮ পিএম

সমুদ্র যেখানে প্রতিবেশী

ছবি: সংগৃহীত

পাহাড় নাকি সমুদ্র? এমন প্রশ্নের ঘোর কাটিয়ে উঠতে মানুষের চলে যায় দিনের পর দিন। কেউ বলে পাহাড়, আবার কেউ বলে সমুদ্র। কারো চিন্তা থাকে আরও ঊর্ধ্বে, তারা বলে পাহাড়ে বসে সমুদ্র। এসব খামখেয়ালি প্রশ্ন-উত্তর খেলা বাদ দিয়ে একবার ভেবে দেখুন তো, সমুদ্রই যদি হয়ে যায় আপনার প্রতিবেশী, কেমন হতো? চোখ বন্ধ করে অনুভব করুন। একটি পাহাড়ের ওপর সাদা বাড়ির দক্ষিণের জানালার পাশে ঘুমিয়ে আছেন। যেখানে সাগরের ঢেউ, বাড়ির ছায়া, এবং আকাশের আলিঙ্গন একসঙ্গে মিলে আপনাকে নিয়ে যাচ্ছে সময়ের একান্ত শিথিলতায়। প্রতিটি মুহূর্ত যেন এক অন্তর্গত গল্প বলছে। মন খারাপে প্রতিবেশীরা যেমন বলে। এরপর দুঃখের অ্যালোপ্যাথি আপনাকে নিয়ে যাচ্ছে অন্য এক পৃথিবীতে। যেখানে মন খারাপ বলতে কিছু নেই। এবার চোখ মেলতে পারেন, চোখ মেললেই যাবেন স্বপ্নের কাছে।

পর্তুগালের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত একটি অদ্ভুত শান্তির জায়গা, যার নাম আজেনহাস ডো মার। এটি পর্তুগালের সিনত্রা পৌরসভার একটি সমুদ্রতীরবর্তী গ্রাম। আজেনহাস ডো মার শব্দটির অর্থ ‘সাগরের জলপাম্প’ এবং এর নামটি একটি শক্তিশালী ঝর্ণা থেকে এসেছে, যা একসময় জলপাম্পগুলোকে চালাত এবং সাগরের দিকে চলে যেত। এই গ্রামটি অতি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাদা সিলিংয়ের বাড়ি এবং প্রশান্তিপূর্ণ পরিবেশের জন্য বিখ্যাত। গ্রামটি খাড়া সাগরতীরের ওপর অবস্থিত, যেখানে গ্রামটির বাড়িগুলো পাহাড়ের ঢালে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এখানকার প্রধান আকর্ষণ হলো সাগরের একেবারে কাছে থাকা প্রাকৃতিক সাঁতার পুল, যা সমুদ্রের জল দ্বারা খনিত এবং অত্যন্ত সুন্দর। এই পুলটি পাথরের মধ্যে গড়ে উঠেছে, যা এখানে সাঁতার কাটার এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা প্রদান করে। এক সময় গ্রামটি মূলত মাছধরা এবং কৃষি কাজের জন্য পরিচিত ছিল, তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শান্ত পরিবেশ এবং সাগরের পাশে অবস্থিত হওয়ার কারণে বর্তমানে এটি পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল। তাই কেউ যদি পর্তুগালের প্রকৃতির এক চিরন্তন রূপ দেখতে চায়, তবে আজেনহাস ডো মার হতে পারে এক অমূল্য গন্তব্য।

যেভাবে যাবেন: আজেনহাস ডো মার-এ যাওয়ার জন্য প্রথমে পর্তুগালের রাজধানী লিসবন যেতে হবে। সেখান থেকে আজেনহাস ডো মার পৌঁছানোর সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায় হলো গাড়ি নিয়ে যাওয়া। এটি লিসবন থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গাড়িতে যেতে সাধারণত ৩০-৪০ মিনিট সময় লাগতে পারে। আপনি A37 (IC19)  সড়ক ধরে সিন্ট্রা শহরের দিকে যেতে পারেন এবং সেখান থেকে স্থানীয় সড়ক ধরে আজেনহাস ডো মার পৌঁছাতে পারবেন। অথবা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট লিসবন থেকে ট্রেন বা অন্য ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাও রয়েছে। 
 

আরবি/ আরএফ

Link copied!