সিজার বা সি-সেকশনের পর দাগ মুছবে কি-না, তা নিয়ে ভুক্তভোগীরা বলেছেন এটা প্রায় অসম্ভব। এ বিষয় নিয়ে চিকিৎসা শাস্ত্র কী বলে? চিকিৎসকের মতে যাদের সি-সেকশন করানো হয়, তাদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য উদ্বেগের কারণ হলো দাগ। দাগ হওয়ার সম্ভাবনা ভয়ঙ্কর হতে পারে। অনেক নতুন মা দাগের তীব্রতা এবং দৃশ্যমানতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিনিয়র স্পেশালিস্ট ডা. মণীষা বর্মণ বলেন, ‘সিজারিয়ান দাগ পুরোপুরি রিমুভ হয় না। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দাগ হালকা হয়ে আসে। আর দাগ হালকা করার জন্য সিজারিয়ান মায়েরা অলিভ অয়েল, ভ্যাসলিন বিভিন্ন ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।’
বর্তমানে অনেক নারী লেজার থেরাপি বেছে নেন। লেজার থেরাপি বিশেষ করে ভগ্নাংশ লেজার চিকিৎসা সি-সেকশনের দাগগুলোকে মোকাবিলার জন্য একটি ব্যাপকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি। এই প্রযুক্তিটি ত্বকের গভীর স্তরগুলোতে ফোকাসড আলোক শক্তি সরবরাহ করে কাজ করে; যা শরীরের প্রাকৃতিক নিরাময় প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করার সময় দাগের টিস্যু ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে। এর ফলে দাগের পুরুত্ব এবং বিবর্ণতা উভয়ই হ্রাস পায়। এ প্রসঙ্গে ডা. মণীষা বর্মণ বলেন, ‘এটি দাগ হালকা দেখানোর একটি অত্যন্ত কার্যকর উপায়। পাশাপাশি অস্ত্রোপচারের স্থানের কাছাকাছি ত্বকের চেহারা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করতে পারে। তবে লেজার থেরাপি ব্যয়বহুল হওয়ায় বাংলাদেশের অনেকেই এই চিকিৎসা করাতে পারেন না।’
স্বাস্থ্য গবেষণাসূত্রে জানা যায়, এ সময় সূর্যের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে। অতিবেগুনি রশ্মির কারণে দাগ কালো হয়ে যেতে পারে এবং আরও দৃশ্যমান হতে পারে। দাগটিকে পোশাক দিয়ে ঢেকে রাখলে বা ব্রড-স্পেকট্রাম সানস্ক্রিন লাগালে প্রতিরোধ করা সম্ভব। এতে দাগটি আশপাশের ত্বকের সঙ্গে আরও নির্বিঘ্নে মিশে যেতে সাহায্য করে। তবে কিছু সিজারিয়ান মায়েদের দাগ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হালকা বুঝা যায়। আর কিছু সিজারিয়ান নারীদের দাগ গাঢ় থেকে যায়।
সি-সেকশনের পর ঘরোয়াভাবে কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে বলে মনে করেন স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। যেমন— কাটা স্থান শুকনো রাখা যেন কোনো জীবাণু আক্রমণ করতে না পারে, সিজারের পর পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া, শরীরকে সক্রিয় রাখা বা হালকা হাঁটাচলা ও ব্যায়াম করা যেন কাটা স্থানে রক্ত প্রবাহ বাড়ে এবং তাড়াতাড়ি শুকায়, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং ৩ মাস পর্যন্ত আয়রন ট্যাবলেট সেবন করা, কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা যেন পেটে চাপ পড়ার কারণে দাগ শুকাতে সময় না নেয়, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা এবং ঘরের স্বাভাবিক সব কাজ করা।
গত পর্বের পর
আপনার মতামত লিখুন :