সেই সব স্বামীরা সৌভাগ্যবান। যাদের আক্কেল নিয়ে স্ত্রীর তীর্যক কণ্ঠের বিদ্রƒপের উপমায় কখনো সিক্ত হয়নি। স্বপনের শালীর বিয়েতে আমন্ত্রণ পেয়ে শুক্রবার দুপুরে স্বপনের বাসায় গিয়ে হাজির হলাম। গিয়ে দেখি টোনা-টুনির মধ্যে কথা কাটাকাটি চলছে। লাল জমিনের ওপর হাতের কাজ করা শাড়িটা তুলে ধরে স্বপনের স্ত্রী গলা ফাটিয়ে ভাষণ দিচ্ছে।
‘আমারে কী এখন এ রঙে মানায়! বিয়ে বাড়িতে এ নিয়ে হাসাহাসির শেষ থাকবে না। বলতো! তোমার আক্কেল কবে হবে!’
জ্ঞানের সর্বশেষ অবস্থায় উপনীত হওয়া স্বপন, মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে। তা দেখে, আমি বিস্মিত হয়ে তাকাতেই সে ফিসফিস করে বলল।
‘বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর দৃষ্টিতে সব পুরুষেরই আক্কেলের অবনতি ঘটে। যা সক্রেটিস থেকে শুরু করে, আমি স্বপন পর্যন্ত এ ধারাবাহিকতা বহন করে চলছি।’
‘তাই বলে!’
‘তাই বলে কোনো কথা নাই। এটাই বাস্তবতা।’
বিয়ের অনুষ্ঠানের খাওয়া-দাওয়া শেষে, স্বপনের স্ত্রীকে প্রশ্নটা করলাম।
‘ভাবি, পুরুষ মানুষকে আক্কেলহীন বলার তাৎপর্যটা কি?’
সে কপাল কুঁচকে ভরাট গলায় উত্তর দিল।
‘পারিবারিক স্বার্থ রক্ষায় অসচেতন থাকলে তো, এ ধরনের মন্তব্য শুনতেই হবে!’
স্বজাতির পক্ষে মানানসই প্রতি উত্তরে, বললাম।
‘সাধ আর সাধ্যের মধ্যেই তো পুরুষরা, আপনাদের প্রফুল্ল রাখতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে জীবনটাকে উৎসর্গ করে!’
‘তাদের মনকে চাঙ্গা রাখতে, আমরাও তো সবটুকু উজাড় করে দেই!’
ঝটপট উত্তরের বিপরীতে বললাম।
‘তাহলে, পুরুষের কোনো কর্মকাণ্ড মনোপুত না হলেই- ক্ষোভ প্রকাশে আপনারা কেন আপত্তিকর শব্দ বেছে নেন?’
‘এগুলো ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ!’
এ কথার তাৎপর্য জানতে, কাউন্টার প্রশ্ন করলাম।
‘আপনাদের এই তীর্যক মন্তব্য কি পুরুষ কে উজ্জীবিত অথবা মনোযোগ বৃদ্ধি ঘটানোর প্রয়াস?’
আমার প্রশ্ন শুনে, কালবিলম্ব না করেই মুখরা রমণী দাঁতভাঙ্গা জবাবটা শোনায়।
‘বিয়েটা করেন। তারপর আপনার ঘাড় মটকানোর দৃশ্যটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম!’
প্রত্যুৎপন্নমতি রানী ভাবির আক্কেলময় উত্তরে, আমার আক্কেলগুড়ুম হওয়ার অবস্থা।
আপনার মতামত লিখুন :