মায়েদের শাড়ির প্রতি বিশেষ ভালো লাগা রয়েছে প্রত্যেক বাঙালি নারীরই। কৈশোরের প্রথম দিকে মায়ের শাড়ি পরেননি এমন নারী কমই আছেন। বড় হওয়ার পরেও মায়ের শাড়ির প্রতি অন্যরকম মায়া কাজ করে। কথায় আছে নারী সুন্দর শাড়িতে। কারণ শাড়ি তার সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে বহুগুণ। এইকথাটা একদমই সত্যি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আজকের আধুনিক নারীর পোশাকের অনেক পরিবর্তন ঘটেছে কিন্তু আজকের আধুনিক নারীও কিন্তু শাড়িকে ভুলে যায়নি। তাই আজও স্পেশাল দিনগুলোতে আজকের আধুনিকার প্রথম পছন্দ কিন্তু শাড়ি।
আজকের আলোচনা তাই শাড়িকে নিয়েই। অনেকেরই ধারণা আছে হালকা রঙের পোশাক পরলে নাকি নিজেকে বয়স্ক দেখায়। তাই আমরা অনেকেই আছি যারা লাইট কালারগুলোকে অবহেলা করে যাই। লাইট কালারগুলোর একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এদের শুদ্ধতা যা পরলে নিজেকে অনেক শুদ্ধ ও সুন্দর লাগে। কিন্ত সঠিকভাবে যদি এই রঙের শাড়ি পরা না যায় তাহলে কিন্তু ভালো লাগার পরিবর্তে বিপরীত হতে পারে অর্থাৎ তাতে নিজেকে অনেকটা বয়স্ক দেখাতে পারে।
যদি শাড়ি খুব হালকা রঙের হয় তবে পছন্দের তালিকাতে কিছু শাড়ি আছে যেগুলো প্রত্যেকের কাছে থাকাটা মাস্ট। সেগুলো হল ঢাকাই জামদানী, কেরালা কটন, তাঁত, হ্যান্ডলুম শাড়ি, শিফন শাড়ি, পিওর সিল্ক।
জেনে নেওয়া যাক ঠিক কীভাবে হালকা রঙের শাড়িতে নিজেকে সুন্দরভাবে সাজানো যায় যাতে নিজেকে বয়স্ক না দেখায় আর উৎসবের দিনে আপনি হয়ে ওঠেন অনন্যা ও সকলের মধ্যমনি।
সুতির শাড়ি: ওজন অনেক হালকা। তাছাড়া ঘাম শুষে নেয়। কাজেই ঘাম ঝরানো গরমকালের জন্যে দারুণ এক শাড়ি। এতে শরীর ঠান্ডা থাকে।
মখমল শাড়ি: ব্যাপক জনপ্রিয় একটি শাড়ি। একেবারে হালকা ওজনের, কোমল এবং মসৃণ জমিনের এক শাড়ি। এটি এই সময়ের গরমের জন্যে আরামদায়ক।
ভিসকস শাড়ি: এ শাড়ির মূল বৈশিষ্ট্য হলো, খুব সহজেই এতে রং করা যায়। এ রং কখনো নষ্ট হয় না। শাড়ির জমিন বাতাস চলাচলের উপযোগী করেই তৈরি।
লিনেন শাড়ি: ঘাম শুষে নেওয়া সুতায় তৈরি হয় লিনেন কাপড়। খুবই আরামদায়ক শাড়ি এটি। খুব সহজে বাতাস চলাচল করে। এটা শুধু দেহকে শীতলই রাখে না, এই ক্লাসিক শাড়িটি আপনাকে রীতিমতো বুঝতে পারে।
শিফন শাড়ি: এটি ওজনে অদ্ভুত রকমের হালকা। খুবই আরামদায়ক। এই শাড়ি কিনে কখনোই ঠকবেন না।
মসলিন, বলাকা সিল্ক, অ্যান্ডি সবই একই রেশম সুতায় বোনা। মসলিন কাপড়টি যে সুতায় বানানো হয়, একই সুতা মোটা করে টুইস্টিং মেশিনে পাকানো হলে বলাকা সিল্ক হয়ে যায়। একটি শাড়ি তৈরি করার পর রেশমের বাতিল সুতাগুলো দিয়ে অ্যান্ডি, দুপিয়ান ও মটকা তৈরি করা হয়। এ ছাড়া আরু অনেক শাড়ির খোঁজ পাওয়া গেছে এ উপমহাদেশে।
পূর্বাঞ্চলীয় শাড়ি
সারা বাংলায় (কাতান, কাঁথা, জামদানি, তাঁত, বাটিক, মসলিন);
মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ (গরদ/কোরিয়াল)
মালদা, পশ্চিমবঙ্গ (তসর রেশম)
ধোনিয়াখালি, পশ্চিমবঙ্গ (ধোনিয়াখালি সুতি)
ফুলিয়া, পশ্চিমবঙ্গ (ফুলিয়া সুতি)
বিষ্ণুপুর, পশ্চিমবঙ্গ (বালুচরী)
বেগমপুর, পশ্চিমবঙ্গ (বেগমপুর সুতি)
মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ (মুর্শিদাবাদী রেশম)
শান্তিপুর, নদিয়া, পশ্চিমবঙ্গ (শান্তিপুরী তাঁত)
রাজশাহী, বাংলাদেশ (রাজশাহী রেশম)
ঢাকা, বাংলাদেশ (ঢাকাই কাতান)
ঢাকা, বাংলাদেশ (ঢাকাই বেনারসি)
ঢাকা, বাংলাদেশ (ঢাকাই জামদানি)
টাঙ্গাইল, বাংলাদেশ (টাঙ্গাইল)
পাবনা, বাংলাদেশ (পাবনা)
কুমিল্লা, বাংলাদেশ (খাদি)
সম্বলপুর, ওড়িশা (সম্বলপুরি)
বড়গড়, ওড়িশা (ইক্কাত)
বড়গড়, ওড়িশা (পাসপালি)
মুগা, আসাম (রেশম)
মেখলা, আসাম (সুতি)
গঞ্জাম, ওড়িশা (বোমকাই রেশম ও সুতি)
কটক, ওড়িশা (খান্দুয়া রেশম ও সুতি)
সুবর্ণপুর, ওড়িশা (সোনপুরী রেশম ও সুতি শাড়ি)
ব্রহ্মপুর, ওড়িশা (ব্রহ্মপুরী রেশম)
ময়ুরভঞ্জ, ওড়িশা (মঠা রেশম শাড়ি)
কোরাপুট, ওড়িশা (বাপ্তা রেশম ও সুতি শাড়ি)
কোরাপুট, ওড়িশা (কোটপাদ পাতা শাড়ি)
বালেশ্বর, ওড়িশা (তান্তা সুতি)
ওড়িশা (কোটকি)
মণিপুর (মণিপুরী তাঁত শাড়ি)
মণিপুর (মাইরাং ফি)
পশ্চিমাঞ্চলীয়
মহারাষ্ট্র (পাইথানি, কাস্তা)
গুজরাট (পাটোলা, ঘাড়ছোলা শাড়ি, বাগ্রু)
গুজরাত, রাজস্থান, পাকিস্তান, সিন্ধু (বন্ধনি)
উত্তরাঞ্চলীয় শাড়ি
রাজস্থান, পাকিস্তান, সিন্ধু (কটা দরিয়া)
বারাণসী, ভারত (বারাণসী)
লখনউ (চিকন)
তাঁত
শালু
দক্ষিণাঞ্চলীয় শাড়ি
অন্ধ্রপ্রদেশ (বেঙ্কটগিরি, মঙ্গলগিরি রেশম, উপ্পাদা রেশম ও জামদানি, চিরালা, বন্দর, বান্দ্রোলঙ্কা, কুপ্পদম, ধর্মবরাম রেশম, গাদোয়াল)
অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গনা (পচাম্পালি)
কর্ণাটক (মহীশূর)
কর্ণাটক (ইলকাল)
কর্ণাটক (মোলাকুলমুরু)
সুলেভবি, কর্ণাটক (সুলেভবি)
কেরালা (কেরল রেশম ও সুতি, বলরামপূরম, মুন্ডুম নেড়িয়াথুম, মায়িলতি রেশম, কান্নুর সুতি, কল্পতি রেশম, ম্যারাডাকা রেশম, সমুদ্রিকাপুরম, কসরগোদ)
তেলেঙ্গানা (নারায়ণপেট)
তামিলনাড়ু (কাঞ্চিপূরম বা কাঞ্জিভরম, চেত্তিনাদ, কুম্বাকনম, তিরুভুয়ানাম, কয়ম্বাতুর সুতি, সেলাম রেশম, ছিনালামপাট্টু বা সানগুডি, ক্যান্ডাঙ্গি, রাসিপুরম রেশম, কুরাই, আরানি রেশম, চেন্নাই, করাইকুডি, মাদুরাই সুতি, নাগরকোয়েল, তুতিকোরিন, থানজাবুর, তিরুপুর, তিরুচিরাপল্লী)
মধ্যাঞ্চলীয় শাড়ি
মধ্যপ্রদেশ (চান্দেরী, মহেশ্বরী, দোখরা রেশম)
ছত্তীসগড় (কোসা রেশম)
আপনার মতামত লিখুন :