ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

চাকরি ছেড়ে সফল উদ্যোক্তা সৈকত, বছরে আয় ২০ লাখ

আহাদ তালুকদার, আগৈলঝাড়া

প্রকাশিত: মে ২১, ২০২৪, ১০:১১ পিএম

চাকরি ছেড়ে সফল উদ্যোক্তা সৈকত, বছরে আয় ২০ লাখ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস। চাকরি করতেন ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানি আরএফএল এর লাইন ইনচার্জ । বেতন ও অন্যান্য সুবিধাসহ মাসে পেতেন অর্ধ লক্ষ টাকা। কিন্তু উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নে ঝুঁকি নিয়ে চাকরি ছেড়ে দেন সৈকত সরকার (৪০)।

শুরু করেন লিচু, আম, মাছ ও মুরগির খামার দিয়ে ব্যবসা। প্রথম দিকে কঠিন সময় পার করলেও এখন তিনি সফল।

সৈকত সরকারের বাড়ি আগৈলঝাড়া উপজেলাধীন গৈলা ইউনিয়নের কুয়েতিয়াপার (বুদার)। চাকরি ছেড়ে তিনি ব্যবসা করছেন শুনে অনেকেই কটূক্তি করতো। এমনকি পরিবারের লোকজনও আফসোস করত। ছিল পুঁজির সংকট। তাই উদ্যোক্তা হওয়ার পথ সহজ ছিল না। কিভাবে হলেন সেই গল্পটা শোনা গেলো তার মুখ থেকেই।

সৈকত সরকার , ২০০৫ সালে ১০ হাজার বেতনে চাকরি শুরু করি। একদিন দুপুরে খাবার চাইলে অফিসের অ্যাসিস্টেন্ট মুখের ওপর বলে জিএম স্যার খাবে। তখন থেকে চ্যালেঞ্জ নেই বড় পদে যাওয়ার। পরে কয়েকটি কোম্পানিতে চাকরি করি। ২০১৮ সালের মে মাসে একটি কোম্পানিতে জিএম পদে যোগ দেই। কিন্ত নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় আসি।

শুরুর দিকে স্বাবলম্বীদের দেখে শুরু করলেন বিভিন্ন ফলের গাছ লাগানো। পরে চাকরি ছেড়ে পুরোদমে ব্যবসার দায়িত্ব নেন সৈকত। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এখন বছরে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা আয়, এখন সে ১৫ টি ঘের,খামারও কয়েক হাজার ফলন নিয়ে এই তরুণ উদ্যোক্তা। এবং সেখানে তিনি কর্মসংস্থান করেছেন নিজের স্কুল সহপাঠীসহ দশ ব্যক্তিকে।

লাইন ইনচার্জ পদে থাকাকালীন মাসে যে টাকা বেতন পেতেন সৈকত । এখন ১৫টি ঘের ও মুরগির খামার ও ফল-ফলাদী থেকে মাস শেষে আয় তার কয়েকগুন বেশি। ব্যবসায়ীক পরিধি বাড়িয়ে আগামী দুই বছরের মধ্যে নিজের প্রতিষ্ঠানে শতাধিক তরুণের কাজের সুযোগ করে দিতে চান। যারা দাঁপিয়ে বেড়াবে সারাদেশ এমনটাই তার লক্ষ।

সৈকত বলেন, সফল উদ্যোক্তা হতে হলে সততা, বিনয়ী, পরিশ্রমী ও চ্যালেঞ্জ নেওয়ার প্রবল সাহস থাকতে হবে। চাকরি ছাড়ার পর আমি তিন মাস ধরে বিভিন্ন উদ্যোগের পিছনের ছুটেছি। পরে সেটা ব্যবসায় কাজে লাগিয়ে সফল হয়েছি। এখন ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি সমাজের জন্য ভালো কিছু করতে চাই।

শিক্ষিত বেকার থেকে শুরু করে হতাশায় ডুবে থাকা যুবকরা সৈকতের পথে হাঁটতে পারেন বলে মনে করেন আগৈলঝাড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার । তিনি বলেন, সৈকত যখন চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় আসে তখন অন্যদের মতো আমিও অবাক হয়েছিলাম। কিন্ত সে প্রমাণ করেছে পরিশ্রম ও ইচ্ছাশক্তি থাকলে সফল হওয়া যায়।

Link copied!