সরকারি নতুন ছয়টি মেডিকেল কলেজ বন্ধ হতে পারে। কলেজগুলোর মানের ঘাটতি থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ ছাড়া এসব কলেজের শিক্ষার্থীদের নিকটবর্তী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হবে এবং দক্ষ চিকিৎসক তৈরিতে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, এসব মেডিকেল কলেজে অবকাঠামো ও জনবলের তীব্র সংকট রয়েছে। ২০১৮ সালে নেত্রকোণা মেডিকেল কলেজ অনুমোদন পায়, তবে ২০১৯ সালে সদর হাসপাতালের কিছু কক্ষে শুরু হয় ক্লাস, যা এখনো জোড়াতালি দিয়ে চলছে। এর পরেও গত বছর আসন সংখ্যা ৫০ থেকে ৭০ করা হয়।
শিক্ষার্থীরা জানাচ্ছেন, নেত্রকোণা মেডিকেল কলেজে রেজিস্ট্রার বা সাব-রেজিস্ট্রার নেই এবং শিক্ষক সংকটও রয়েছে। খণ্ডকালীন শিক্ষকরা এখানে ক্লাস নিচ্ছেন। কলেজের গবেষণাগারে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি না থাকায় শিক্ষার্থীরা বইয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, ফলে হাতে-কলমে কিছু শেখার সুযোগ নেই।
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের জমি অধিগ্রহণ এখনো সম্পন্ন হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ছয় বছর ধরে সদর হাসপাতালের মাত্র আটটি কক্ষে কলেজ চলছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকার কারণে এক ব্যাচের ক্লাস চলাকালীন অন্য ব্যাচ দাঁড়িয়ে থাকে। কলেজে নিজস্ব হোস্টেলও নেই, যার কারণে শিক্ষার্থীরা ভাড়া ভবনে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
এছাড়া, নওগাঁ, নীলফামারী, মাগুরা এবং হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজগুলোর অবস্থাও একই। এসব কলেজ কোনো পরিকল্পনা বা প্রস্তুতি ছাড়া প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব এবং প্রভাবশালী মন্ত্রী, এমপি ও আমলাদের ভূমিকা ছিল।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেন জানান, “এই ছয়টি মেডিকেল কলেজের কোনোটিতেই স্থায়ী ক্যাম্পাস নেই, সদরের হাসপাতাল বা ভাড়া করা ভবনে চলছে ক্লাস। মানসম্মত ল্যাব নেই, জনবল অনুমোদন না হওয়ায় অন্য কলেজ থেকে শিক্ষক আনা হচ্ছে। আসন সংখ্যা বাড়ানো হলেও সংকট বিদ্যমান। এ অবস্থায় সরকার ছয়টি মেডিকেল কলেজ নিয়ে নতুন করে ভাবছে।”
স্বাস্থ্য বিভাগ আরও জানায়, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক বিবেচনা ছাড়াই মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেওয়া হবে এবং পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির ভিত্তিতেই তা হতে হবে।
সূত্র: ইনডিপেন্ডেন্ট টিভি অনলাইন