চলতি মৌসুমে আবহাওয়া পবিবর্তনের ফলে জ্বর, কাশি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগী বাড়ছে। শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেওয়া রোগীর সংখ্যা অন্য সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় নিউমোনিয়া ও অ্যাজমার মতো মারাত্মক রোগ থেকে বাঁচাতে শিশুদের বিশেষ যত্নের পরামর্শ চিকিৎসকদের।
আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের দুই নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছয় মাসের শিশু তাহসীন। জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ছয় দিন আগে জামালপুর থেকে এ হাসপাতালে ভর্তি হয়।
একই হাসপাতালের এক নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ভোলার আয়াত রহমান। তীব্র জ্বর ও বমি না কমায় ভর্তি করা হয় এ হাসপাতালে।
চিকিৎসকরা বলছেন, ঋতু পরিবর্তনের এ সময়টাতে বাতাসে জীবাণুর ঘনত্ব বেশি থাকে। ছোট শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় অন্য সময়ের তুলনায় হাসপাতালে রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল হক বলেন, কাশি, সর্দি এবং ঠান্ডাজনিত রোগ বেড়ে গেছে। এ কারণে কিছু কিছু বাচ্চা আবার নিউমোনিয়ায় টার্ন করে। অথবা ব্রংকালাইটিস আছে যাদের বা অ্যাজমা আছে তাদের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। এই বাচ্চাগুলোর হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয়ে যায়।
শীতের এ সময়ে অভিভাবক যেন সন্তানের গোসলের পাশাপাশি গরম কাপড় পড়ানোর ক্ষেত্রেও সতর্ক হোন এ পরামর্শও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের উপ-পরিচালক(ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. সালাউদ্দিন মাহমুদ বলেন, এই সময় একটু বাড়তি যত্ন খুবই প্রয়োজন। ১০ ভাগে টুকরো করে শুকনা সুতি কাপড় যদি বাচ্চাদের আশেপাশে রেখে দেওয়া যায়। প্রতি ঘণ্টায় না হলেও ২ তিন ঘণ্টা পরপর যদি এই কাপড় দিয়ে বাচ্চার পিঠটা বা মাথার পেছনটা যদি মুছে দেওয়া যায় তাহলে কিন্তু ঘাম জমে গিয়ে আর ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা থাকে না।
অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল হক বলেন, আমরা ভুল করি। ঠান্ডা বেড়ে গেলে পানি কমিয়ে দেই। কিন্তু প্রচুর পানি খেতে হয়। তারপর স্বাস্থ্যকর ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ভিটামি–সি ও ডিম একটু বেশি খেতে হয়। এতে আমাদের আক্রমণটা কম হবে।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, অন্য সময়ে প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেওয়া এক হাজার রোগীর মধ্যে জ্বর, ঠান্ডা বা নিউমোনিয়ার রোগী আসে ১৪০ থেকে ১৫০। কিন্তু নভেম্বরে এ ধরণের রোগীর সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :