ঢাকা শুক্রবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৪

এশিয়ার শিশুখাদ্যে উদ্বেগজনক মাত্রায় গোপন চিনি

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২৪, ০৮:৪২ পিএম

এশিয়ার শিশুখাদ্যে উদ্বেগজনক মাত্রায় গোপন চিনি

ফাইল ছবি

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নেসলের সেরেলাকের মতো শিশুদের জন্য বাণিজ্যিক যেসব খাবার ক্রমবর্ধমানভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, সেগুলোতে লুকানো শর্করার পরিমাণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে শুক্রবার ফিলিপাইনের মেকআপ আর্টিস্ট জেনিলিন এম ব্যারিওসের মতো এক কর্মব্যস্ত মায়ের উদাহরণ টেনেছে বিবিসি। কর্মব্যস্ততার জন্যই জেনিলিনের মতো মায়েরা সাধারণত বাজারে তৈরি অবস্থায় পাওয়া যায়—এমন শিশুখাদ্যের প্রতি ঝুঁকছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, গত পাঁচ বছরে শিশুদের খাদ্যের বাজার দ্বিগুন হয়েছে। এমন সব খাবারের মধ্যে সেরেলাক প্রয়োজনীয় পুষ্টি প্রদান করলেও এর মধ্যে থাকা শর্করার অতিরিক্ত পরিমাণ নিয়ে শঙ্কিত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

নেসলে অবশ্য শিশুদের খাদ্যের মধ্যে বাড়তি শর্করা যুক্ত করার বিষয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করে আসছে। এই কোম্পানি দাবি করেছে, তারা কোডেক্স কমিশন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নির্দেশিকা মেনেই খাদ্যে শর্করা যুক্ত করে থাকে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই মানগুলোকে অপর্যাপ্ত বলে সমালোচনা করেছে। বিশেষ করে, তিন বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে।

ইউনিসেফের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় অর্ধেক শিশুর খাবারে অতিরিক্ত শর্করা রয়েছে। এটি শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিকে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়িয়ে দিচ্ছে। কারণ, বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, জীবনের প্রথম দিনগুলোতে চিনিযুক্ত স্বাদের অভ্যাস কোনো শিশুকে আজীবনের জন্য এ ধরনের খাবারের দিকে ধাবিত করতে পারে। এ বিষয়টি শিশুদের ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। ফিলিপাইনের মতো দেশে শিশুদের স্থূলতা একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

সমালোচকেরা যুক্তি দিয়েছেন—শিশুদের জন্য যেসব চিনিযুক্ত খাবার বাজারে পাওয়া যায়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলোর প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণার দ্বারা আকৃষ্ট হন মা-বাবারা। এভাবে মা-বাবারা মূলত শিশুর পুষ্টি সম্পর্কে একটি বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যান।

বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে ফিলিপিনো সিনেটর ইমি মার্কোসের মতো ব্যক্তিরা শিশুদের খাবারে শর্করা যুক্ত নিষিদ্ধ করার জন্য আইন প্রণয়নের দাবি তুলেছেন। শুধু তা-ই নয়, বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণেরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বিবিসি জানিয়েছে, শিশুখাদ্য নিয়ে এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যে নেসলে কর্তৃপক্ষ তাদের পণ্যকে চিনিমুক্ত করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ইতিমধ্যে পণ্যগুলোকে চিনিমুক্ত করার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে কোম্পানিটি। তবে তাদের এই রূপান্তরটি অত্যন্ত ধীর গতিতে হচ্ছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, জীবনের প্রথম এক হাজার দিনে কোনো শিশুর খাবারের চিনি যদি নিয়ন্ত্রণ করা যায় বা খাবার থেকে চিনির মাত্রা কমিয়ে রাখা যায়, তবে পরবর্তী জীবনে ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে।

আরবি/ এইচএম

Link copied!