চীনসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) এবার বাংলাদেশেও শনাক্ত হয়েছে। পার্শ্ববর্তী একাধিক দেশে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায়, বাংলাদেশে এর সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সতর্কতা জারি করেছে। সেই সঙ্গে ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে ৭টি নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হালিমুর রশিদ স্বাক্ষরিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই সতর্কতা প্রকাশ করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চীনসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে এইচএমপিভি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং ভাইরাসটির তীব্রতা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, গর্ভবতী নারী এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য এই ভাইরাস উচ্চ ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে এবং চীনসহ অন্যান্য দেশে এর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশে ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য সব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এবং পয়েন্ট অব এন্ট্রি-এ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করা প্রয়োজন।
এ ছাড়া, জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ৭টি দফা নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. শীতকালীন শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন।
২. হাঁচি/কাশি সময়/বাহু/টিস্যু দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখুন।
৩. ব্যবহৃত টিস্যুটি অবিলম্বে ঢাকনাযুক্ত ময়লা ফেলার বুড়িতে ফেলুন এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।
৪. আক্রান্ত হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের সম্পন্ন এড়িয়ে চলুন এবং কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।
৫. ঘনঘন সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধৌত করুন (অন্তত ২০ সেকেন্ড)।
৬. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ ধরবেন না।
৭. আপনি জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট আক্রান্ত হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকুন। প্রয়োজন হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
অপরদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা পরিস্থিতির উপর নজর রেখে চলেছে এবং সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস সাধারণত ফ্লু ধরনের উপসর্গ সৃষ্টি করে, যা ২-৫ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। সুতরাং, আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :