রাজধানীর ধানমন্ডির সীমান্ত স্কয়ারে জমে উঠেছে আবাসন মেলা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অবসর উদযাপনের উদ্দেশ্যে গ্রাহকরা ভিড় করছেন মেলায়। তাদের বেশিরভাগই সুবিধা মতো প্রকল্প বেছে নিচ্ছেন। ঢাকার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ আবাসনের স্থান নির্ধারণ করছেন দর্শনার্থীদের একাংশ।
আবাসন খাতের প্রধানত ক্রেতা সরকারের আমলা, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এবং ব্যবসায়ীরা। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে তাদের একটি অংশ অন্তরীণ। যার ফলে আওয়ামী সরকারের আমলের চেয়ে তুলনামূলক মেলায় সাড়া অনেক কম বলে জানান প্রতিষ্ঠানগুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিরা।
রাজধানীর অভিজাত এলাকা ধানমন্ডির জিগাতলায় সীমান্ত স্কয়ারে (পুরাতন রাইফেলস স্কয়ার) ‘ধানমন্ডি আবাসন মেলা-২০২৪’ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) শুরু হওয়া ৩ দিনব্যাপী মেলা চলবে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত। মেলায় দেশের স্বনামধন্য ৯টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।
মেলায় পর্যটন শিল্পকে গুরুত্ব দিয়ে কক্সবাজার, কুয়াকাটা, গাজীপুরসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকার রিসোর্টে বিনিয়োগে উদ্দেশ্যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা, পূর্বাচল, কেরানীগঞ্জ ও মাওয়া হাইওয়েসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় কম মূল্যে প্লট, ফ্ল্যাট ও কমার্শিয়াল স্পেস বিক্রির তথ্য তুলে ধরেন প্রতিনিধিরা।
তবে আগ্রহী ক্রেতারা ৫ তারকা মানের হোটেলের শেয়ার ও মালিকানা জানতে বেশি আগ্রহী। আজ শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত হোটেলের শেয়ার ক্রয়ে বেশি সাড়া পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
মেলার আকর্ষণ হিসেবে সব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ১০-২০ শতাংশ বিশেষ মূল্য ছাড় দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আগ্রহীদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরণের উপহার সামগ্রী। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।
মেলার আয়োজক বাংলা ইভেন্ট ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. ইসলাম শেখ বলেন, ঢাকার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ আবাসন নিয়ে চমৎকার ও আকর্ষণীয় প্রকল্প আমরা তুলে ধরেছি। গ্রাহকদের বেশ সাড়াও পাচ্ছি।
প্রত্যাশার কথা জানিয়ে ভাইয়া হাউজিংয়ে জেনালের ম্যানেজার রাফিজা তানজিন বলেন, আজ বেশি সাড়া পাচ্ছি। ছুটির দিনগুলোতে বিকালে লোকজন আসতে শুরু করে। তবে আজ বিকালে যে সাড়া পেয়েছি, গতকালের তুলনায় অনেক ভালো।
দর্শনাথীদের সম্পর্কে ভাইয়া হাউজিংয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আবুল বাশার রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ঢাকার ভবিষ্যৎ আবাসন নিয়ে তাদের বেশিভাগের দৃষ্টি। আবার অনেকে দেশের পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চান। তারা চান- ঢাকা ও কক্সবাজারের জন্য আইকনিক কিছু। তাদের জন্য আমাদের আছে কক্সবাজার ও কুয়াকাটার সেরা হোটেলের তথ্যচিত্র। তবে ঢাকার বাইরে অর্থাৎ টঙ্গীতে যারা থাকেন তাদের জন্য সেখানে হাসপাতাল নির্মাণের বিশেষ তথ্য তুলে ধরছি।
দর্শকের পছন্দ সম্পর্কে জানতে চাইলে ভাইয়া গ্রুপের সেলস এন্ড মার্কেটিং বিভাগের হুমায়রা রহমান বলেন, গ্রাহক চান আরও ভালো কিছু। তাদের জন্য আমাদের রয়েছে ঢাকা পাশেই ভবিষ্যতের আবাসন ব্যবস্থা। তারাও বেশ উৎসাহ নিয়ে দেখছেন এবং আমরা বেশ সাড়া পাচ্ছি।
মেলা সম্পর্কে এ্যাম্পায়ার গ্রুপের অ্যাসিটেন্ট ম্যানেজার সন্দীপ ঘোষ বলেন, আবাসন খাতের প্রধানত ক্রেতা সরকারের আমলা, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এবং ব্যবসায়ীরা। তারাই এখন নেই। যে কারণে গত বছরের তুলনায় সাড়া কম। অন্যদিকে গতকালের তুলনায় একটু বেশি সাড়া পচ্ছি। তবে এটা ধীরে ধীরে বাড়বে।
তিনি বলেন, দর্শনার্থীদের আগ্রহ নিরাপদ আবাসন। ঢাকার পূবাচলে ২০০ কাঠার অ্যাম্পায়র ভ্যালী সম্পর্কে দর্শনার্থীদের আগ্রহ বেশি বলেন সন্দীপ ঘোষ।
নর্থ সাউথ গ্রুপের ম্যানেজার সোহেল রানা বলেন, আজ ২০ ইউনিট সেল করতে পেরেছি, যা গতকালের তুলনায় বেশি। আগামীকাল সরকারি ছুটি থাকায় প্রত্যাশা আরও বাড়ছে বলেন তিনি।
ধানমন্ডি আবাসন মেলায় ৯টি আবাসন প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সেগুলে হলো- ভাইয়া হোটেল এন্ড রিসোর্স লিমিটেড, নর্থ সাউথ প্রুপ, এ্যাম্পেয়ার গ্রুপ, গ্রিন ভিউ সিটি, সানসেট কুয়াকাটা হোটেল এন্ড রিসোর্ট, স্বপ্ন সিন্ধু, শীললঙ্কা গ্রীন হাউজিং, এইচ আর গ্রুপ এবং ইউনিভার্স গ্রুপ।
আপনার মতামত লিখুন :