ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিক্রি করে দিতে হবে টিকটক, জানিয়ে দিল আদালত

ডিজিটাল দুনিয়া ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৪, ০৩:০২ পিএম

বিক্রি করে দিতে হবে টিকটক, জানিয়ে দিল আদালত

ছবি: সংগৃহীত

আমেরিকাতে নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হলে মালিকানা পরিবর্তনের কোনো বিকল্প নেই টিকটকের সামনে। আগামী বছরের শুরুতে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই টিকটকের মালিকানা ছাড়তে হবে চীন-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে। অন্যথায়, দেশটিতে টিকটকের কার্যক্রম বন্ধ করে দিবে আমেরিকা সরকার। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) দেশটির ফেডারেল আপিল আদালত টিকটক-এর মালিকানা পরিবর্তন সম্পর্কিত সরকারের সিদ্ধান্তকেই বহাল রেখেছে।

বিগত কয়েক মাস ধরেই আমেরিকাতে নিজেদের অস্তিত্ব সংকটে ছিল স্বল্প দৈর্ঘ্যের ভিডিও শেয়ারিং এই অ্যাপটি। তবে তাঁদের আশা ছিল ফেডারেল আপিল আদালত সরকারের সিদ্ধান্তকে বাতিল করবেন, বা স্থগিত রাখবেন। কিন্তু সে আশায় গুরেবালি। টিকটকের সামনে এখন একটাই রাস্তা- সমস্যার সমাধানে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়া।

মূলত টিকটকের চীনা মালিকানা নিয়েই সংশয় আমেরিকার বাইডেন প্রশাসনের। তাঁদের দাবী, আমেরিকার টিকটক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চীন সরকারের সাথে শেয়ার করেছে বাইটড্যান্স। ফলে আমেরিকার জনগণের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে টিকটকের চীনা মালিকানায় পরিবর্তন দেখতে চাইছে দেশটির আইন বিভাগ। তবে সরকারের এই অভিযোগ সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে টিকটক।

বিদেশি মালিকানাধীন অ্যাপসগুলোকে নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে আমেরিকা সরকারের যে অবারিত স্বাধীনতা সেটাকেই যেন মান্যতা দিল আদালতের সাম্প্রতিক এই সিদ্ধান্ত। তবে বাক-স্বাধীনতার সমর্থকরা আদালতের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন। দেশটির সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন বলছে, আদালতের এই সিদ্ধান্ত ‘ত্রুটিপূর্ণ ও বিপজ্জনক নজির’ স্থাপন করেছে।

সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন-এর জাতীয় নিরাপত্তা প্রজেক্টের ডেপুটি ডিরেক্টর প্যাট্রিক টুমে বলেছেন যে, টিকটক নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তটি অ্যাপটির লাখো আমেরিকান ব্যবহারকারীর প্রথম সংশোধনী দ্বারা প্রাপ্ত অধিকারকে সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করেছে। তবে আদালত এই ইস্যুতে ভিন্নমত পোষণ করছে।

আমেরিকার আপিল আদালত বলেছে, বিদেশি মালিকানাধীন অ্যাপস নিষিদ্ধ সম্পর্কিত আইনটি  হঠাৎ করে তৈরি করা হয়। বরং বিস্তারিত পর্যালোচনা এবং কংগ্রেস ও একাধিক প্রেসিডেন্টের মতামতের ভিত্তিতে এবং তাঁদের তত্ত্বাবধানে তৈরি করা হয়েছে এই আইনটি। মূলত চীনের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিপক্ষকে রুখতেই সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে বলে মত আদালতের। উল্লেখ্য, এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময়েও আমেরিকাতে টিকটক-কে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়। তবে সে যাত্রায় সফল হননি ট্রাম্প। এছাড়া ২০২০ সালে ট্রাম্প চীনের টেনসেন্ট-এর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান উইচ্যাট নিষিদ্ধের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সেবার আদালত বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।

টিকটকের আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট যদি সরকারের সিদ্ধান্তকেই বহাল রাখে সেক্ষেত্রে আগামী ১৯ জানুয়ারির টিকটকের মালিকানা বাইটড্যান্সকে ছাড়তে হবে। সেক্ষেত্রে টিকটক ৯০ দিনের সময় বাড়ানোর আবেদন করতে পারে সরকারের কাছে। এখন বাইডেন সরকার এই বাড়তি সময়টুকু বাইটড্যান্সকে দিবে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়। উল্লেখ্য, আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ নেওয়ার মাধ্যমে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করতে যাচ্ছেন।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

আরবি/ এইচএম

Link copied!