সরকার মাত্রারিক্ত কর না কমালে প্রান্তিক পর্যায়ে সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া সম্ভব না বলে মনে করছেন প্রযুক্তি ও টেলিকম খাত সংশ্লিষ্টরা। খুব সহজেই ১০ কোটি মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর থেকে অনেক অর্থ আদায়ের সুযোগ থাকায়, সরকার নিজেই কর হ্রাস করতে চায় না বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা।
টেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি পলিসি এডভোকেসি প্লাটফর্ম (টিপাপ) এই গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করে। টিপাপের সমন্বয়ক বিডিজবস এর প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুরের সঞ্চালনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম কোম্পানি, ইন্টারনেট সার্ভিস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, সফটওয়্যার ও ফ্রিল্যান্সিং কমিউনিটির প্রতিনিধিরা ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ফাহিম মাসরুর দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের কিছু তথ্য উপস্থাপন করে বলেন, বাংলাদেশে শহর ও গ্রামের মধ্যে ইন্টারনেটের ব্যবহারে বিশাল পার্থক্য। শহরে যত মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে গ্রামে তার থেকে অর্ধেক মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। গড়ে শহরে একজন ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারী ১০০ গিগাবাইট ডাটা মাসে ব্যবহার করে, গ্রামে এর পরিমান গড়ে মাত্র ৬ গিগাবাইট।
আরও পড়ুন: ডাটা ও মিনিট পরবর্তী প্যাকেজে যুক্ত করতে আইনি নোটিশ
পার্শবর্তী ভারতে গড়ে একজন মোবাইল ডাটা ব্যবহারকারী বাংলাদেশ থেকে ৩ গুণ বেশি ডাটা ব্যবহার করে। মোবাইল ডাটা চার্জ বেশি হওয়াতে আমরা পার্শবর্তী দেশগুলো থেকে অনেক পিছিয়ে পড়ছি, বিশেষ করে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ প্রয়োজনীয় সেবা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে।
এসময় বক্তারা বলেন, দেশে মোবাইল ডাটা মূল্যের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী সরকারি অতিরিক্ত কর। ১৫ শতাংশ ভ্যাট ছাড়াও ২৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ২ শতাংশ সারচার্জ, ৬ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ারিংসহ আরো নানা ধরণের সরকারি খরচের জন্য মোবাইল ডাটার মূল্য দিনে দিনে বাড়ছে। গত ১০ বছরে মোবাইলের উপর কর দ্বিগুনের বেশি বেড়েছে বলে মোবাইল অপারেটরদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে গত সপ্তাহে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর নতুন করে আরোপিত সম্পূরক শুল্ক (মোবাইলের ক্ষেত্রে ৩% ও ব্রডব্যান্ডের ক্ষেত্রে ১০%) প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এসময় অন্যান্যদের মাঝে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরগুলোর সংগঠন এমটবের সেক্রেটারি জেনারেল লেফটেনেন্ট কর্ণেল (অবঃ) মোহাম্মদ জুলফিকার, মোবাইল অপারেটর রবি’র চিফ রেগুলেটরি অফিসার শাহেদুল আলম, বাংলালিংকের চিফ রেগুলেটরি অফিসার তাইমুর রহমান, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাপ্রদানকারীদের সংগঠন আইএসপিএবি’র সভাপতি ইমদাদুল হক, আইআইজি এসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুল হাকিম, বেসিসের প্রাক্তন সভাপতি আলমাস কবির বক্তব্য রাখেন।
আপনার মতামত লিখুন :