বর্তমানে দেশের ৭২ দশমিক ৩ শতাংশ পরিবার অন্তত একটি স্মার্টফোন ব্যবহার করে, যা দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ ত্রৈমাসিক জরিপ অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) স্মার্টফোন ব্যবহারকারী পরিবারের হার ছিল ৭০ শতাংশ। সেটি অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ দশমিক ৩ শতাংশে। এছাড়া ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন রয়েছে ৬৫ শতাংশ মানুষের হাতে।
জরিপ অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৫২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে। টেলিভিশন রয়েছে ৬৩ দশমিক ৫ শতাংশ পরিবারের ঘরে, আর রেডিও ব্যবহার করেন ১৫ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ। ৯৯ শতাংশ পরিবার বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে এবং মাত্র ৯ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার কম্পিউটার ব্যবহার করছে।
বিবিএস-এর ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার’ বিষয়ক এই ত্রৈমাসিক জরিপে দেখা গেছে, স্মার্টফোন ব্যবহার বাড়লেও ইন্টারনেট ব্যবহার সেই অনুপাতে বাড়েনি। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী পরিবারের হার ছিল ৫০ দশমিক ৪ শতাংশ, ডিসেম্বর শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক ৪ শতাংশে। অর্থাৎ এখনো দেশের প্রায় অর্ধেক পরিবার সরাসরি ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে।
এই জরিপে দেখা গেছে, শহর ও গ্রামাঞ্চলের মধ্যে ব্যবহারের একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। শহরাঞ্চলে ৬১ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে, যেখানে গ্রামাঞ্চলে এ হার ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ। ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার আরও কম, যা বর্তমানে ৪৭ দশমিক ২ শতাংশ।
এই জরিপের আওতায় দেশের ২ হাজার ৫৬৮টি এলাকার ৬১ হাজার ৬৩২টি পরিবারের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী ব্যক্তিদের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের তথ্য এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বিবিএস জানিয়েছে, এই তথ্য আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ), এসডিজি ট্র্যাকারসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানিক চাহিদা পূরণে ব্যবহার হবে। জরিপে রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ইন্টারনেট ব্যবহারের পাশাপাশি এসব প্রযুক্তির মালিকানার বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২২ সালে যেখানে পরিবারপ্রতি ইন্টারনেট ব্যবহারের হার ছিল ৩৮ শতাংশ, ২০২৩ সালের শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক ৪ শতাংশে—অর্থাৎ দুই বছরে প্রায় ১৪ শতাংশ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহার বেড়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ। তা সত্ত্বেও দেশের অধিকাংশ পরিবার এখনো ডিজিটাল সংযোগ থেকে বঞ্চিত।
আপনার মতামত লিখুন :