রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫

পৃথিবী ধ্বংসের সময় জানাল বিজ্ঞানীরা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২৫, ১০:১৫ পিএম

পৃথিবী ধ্বংসের সময় জানাল বিজ্ঞানীরা

ছবিঃ সংগৃহীত

মহাকাশের গ্রহগুলো একটি নির্দিষ্ট সময় পরে নক্ষত্রে পরিণত হয়। এবং নক্ষত্রগুলো মৃত্যুর সময় ফুলে লাল বর্ণ ধারণ করে, যাকে ‘লাল দৈত্য’ বলা হয়। ২০২০ সালের মে মাসে এই প্রক্রিয়াটি নজরে আসে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের। নক্ষত্রের পতন প্রক্রিয়া নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণে নেমে পড়েন তারা।

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার টেলিস্কোপ ‘জেমস ওয়েব’ যাত্রা শুরু করে ২০২১ সালে, তবে পূর্ণমাত্রায় কার্যক্রম শুরু হয় ২০২২ সালে। জেমস ওয়েব দিয়ে পর্যবেক্ষণের সময় জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেন যে, গ্রহের মৃত্যু নিয়ে এতদিন তারা যা জানত, তা সঠিক নয়। নক্ষত্র নয় বরং গ্রহ-ই নক্ষত্রের সংস্পর্শে আসে এবং এর পতন হয়। গ্রহের এই মৃত্যু প্রক্রিয়া খুবই নাটকীয়ভাবেই ঘটে বলে জানান বিজ্ঞানিরা।

হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের পোস্টডক্টরাল ফেলো মরগান ম্যাকলিওড বলেন, ‘জেমস ওয়েবে দেখা যায়, নক্ষত্র গ্রহের মধ্যে আছড়ে পরছে এবং গ্রহ থেকে সকল গ্যাসীয় পদার্থ বের হয়ে যাচ্ছে। ফলে গ্রহের উপর এর প্রভাব কেমন তা আমাদের কাছে ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান সংস্থা’র জ্যোতির্বিজ্ঞানী রায়ান ল্যাও বলেন, নক্ষত্র পতনের পূর্বে প্রচুর পরিমাণে হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন নির্গত হয়। টেলিস্কোপে আরও ধরা পরে যে এসকল পদার্থ নির্গমনের ফলে নক্ষত্রের চারপাশে গ্যাস নির্গত হয়ে একধরণের বলয় তৈরি হয়। এবং এই বলয়কে ঘিরে রাখে একধরণের ধূসর মেঘ।

টেলিস্কোপে আরও দেখা যায়, অজ্ঞাত একটি নক্ষত্র মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে অবস্থিত, যা পৃথিবী থেকে ১২ হাজার আলোকবর্ষ দূরে। আলোকবর্ষ হলো এক বছরে আলো যত দূর পর্যন্ত পৌঁছায় অর্থাৎ ৫ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন মাইল (৯ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার)। অজ্ঞাত এই নক্ষত্রটি সূর্য থেকে কম অনুজ্জ্বল, তবে এর ব্যাসার্ধ ৭০ শতাংশের কাছাকাছি।

গ্যাসে পরিপূর্ণ গ্রহ বৃহস্পতি। গ্রহটিকে গ্যাস দানবও বলা হয়। এটি সৌরজগতের সর্ববৃহৎ গ্রহ। বিজ্ঞানীদের ধারণা, মহাকর্ষীয় মিথস্ক্রিয়ার কারণে আমাদের গ্রহের কক্ষপথ ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ম্যাকলিওডের মতে, ‘আমাদের কক্ষপথ এখনো ততটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি আর সৌরজগতের কোনো গ্রহ এখনো সূর্যের কাছে আসেনি। তবে এর মানে এই নয় যে কক্ষপথ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না আর সূর্য কোনো গ্রহকে গ্রাস করবে না।’

অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার প্রধান লেখক ল্যাও বলেন, জেমস ওয়েবের দেয়া তথ্যে গ্রহের অন্তিমকালের ধারণা পাওয়া যায়। আমরা ধারণা করছি, আজ থেকে ৫ বিলিয়ন বছর পরে সূর্যের পরিধি বৃদ্ধি পাবে। তখন হয়তো সূর্য সৌরজগতের বুধ, শুক্র এমনকি পৃথিবীকেও গ্রাস করে ফেলবে। এবং ধীরে ধীরে গ্রহগুলো এক এক করে নিঃশেষ হয়ে যাবে।

Link copied!