ইসরায়েলের সঙ্গে সমন্বয়ে ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি ও তাদের সমর্থকদের সঙ্গে সম্পর্কিত পোস্টগুলো সেন্সর করে তা মুছে ফেলেছে মেটা।
ড্রপসাইটে প্রকাশিত এক নতুন প্রতিবেদন অনুসারে জানা যায়, মেটাতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ১০০ জনেরও বেশি প্রাক্তন গুপ্তচর এবং সৈন্য কাজ করে।
ফাঁস হওয়া ওই নথি থেকে জানা গেছে, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনপন্থি বক্তব্য দমনের ক্ষেত্রে ইসরায়েল সরকারের বিপুল পরিমাণ টেকডাউন অনুরোধ মেনে নিয়েছে।
ড্রপসাইটের হাতে আসা ওই তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে ইসরায়েল কর্তৃক পাঠানো ৯৪ শতাংশ টেকডাউন অনুরোধ কার্যকর করেছে মেটা – যা আধুনিক ইতিহাসে সেন্সরশিপের পর্দার আড়ালে সবচেয়ে বড় অনলাইন সেন্সরশিপ প্রচারণার রূপ নিয়েছে।
নথিগুলোতে প্রকাশ পেয়েছে, ইসরায়েলের এসব অনুরোধ বেশিরভাগই ‘সন্ত্রাসবাদ’ অথবা ‘সহিংসতা ও উস্কানি’ বিভাগে পড়ে বলে দাবি করেছে মেটা। যা ফেসবুকের কনটেন্ট গাইডলাইনের অন্তর্গত। কিন্তু বাস্তবে এসব টেকডাউন লক্ষ্য করেছে এমন সব পোস্টকে, যেগুলোতে ইসরায়েলবিরোধী মন্তব্য ছিল বা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতির প্রকাশ ছিল।
মেটার অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, এই অনুরোধগুলো শুধু ইসরায়েলের ভেতরের পোস্ট নয় বরং আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যবহারকারীদের পোস্টকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে। এতে বোঝা যায়, সীমান্তের বাইরেও ইসরায়েলের সেন্সরশিপ প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে।
সবচেয়ে আশ্চর্যজনক তথ্য হলো, মেটা গড়ে মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ৯০,০০০-এরও বেশি পোস্ট সরিয়ে ফেলেছে। ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনের ফলে প্রায় ৩৮.৮ মিলিয়ন অতিরিক্ত পোস্ট ডিলিট করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনা শুধু ফিলিস্তিন সংক্রান্ত আলোচনাকে দমন করা নয়, বরং এটি বৈশ্বিকভাবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াকে যেভাবে রাজনৈতিক প্রভাবের আওতায় এনে সেন্সরশিপ চালানো হচ্ছে, তা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থি।