মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ডিজিটাল দুনিয়া ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৪, ০৮:৩৪ পিএম

banner

উল্টে যাচ্ছে পৃথিবীর চুম্বক মেরু, বিপর্যয়ের বিষয়ে যা বলছে বিজ্ঞানীরা

ডিজিটাল দুনিয়া ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৪, ০৮:৩৪ পিএম

উল্টে যাচ্ছে পৃথিবীর চুম্বক মেরু, বিপর্যয়ের বিষয়ে যা বলছে বিজ্ঞানীরা

ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবী একটি বিশাল চুম্বকক্ষেত্র নিয়ে ঘুরছে, যার চৌম্বক মেরু উত্তর ও দক্ষিণে অবস্থান করে। কিন্তু অনেকেই শুনেছেন যে এই চৌম্বক মেরু উল্টে যেতে পারে এবং এর ফলে পৃথিবীতে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। সম্প্রতি চুম্বক মেরুর উল্টে যাওয়ার কথাটা আরও জোর দিয়ে বলছেন বিজ্ঞানীরা।

এই খবরে অনেক আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। আসলেই কি চুম্বক মেরু উল্টে গেলে ভয়াবহ বিপর্যয় নামবে পৃথিবীতে। বিজ্ঞান কী বলে?

পৃথিবীর চুম্বকক্ষেত্র তৈরি হয় এর গলিত লোহার কেন্দ্র বা ভূগর্ভস্থ ‘আউটার কোর’-এ। এই গলিত লোহার ঘূর্ণনের ফলে একটি ডায়নামো প্রভাব তৈরি হয়। তারই ফল হলো পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র। আর এই চুম্বক ক্ষেত্রেই দুটি মেরু আছে। পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ বিন্দুতে।

বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন যে, পৃথিবীর চুম্বক মেরু প্রায় প্রতি কয়েক লাখ বছরে একবার উল্টে যায়। সর্বশেষ এই ঘটনা ঘটেছিল প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার বছর আগে, যা ‘ব্রুনস-মাতুয়ামা’ নামে পরিচিত। এখন আবার মেরু ওল্টানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, কিছু পরিবর্তন হতে পারে, তবে সেগুলো সব সময় বিপর্যয়ের কারণ হবে না। মেরু উল্টে যাওয়ার সময় চৌম্বকক্ষেত্র দুর্বল হতে পারে। এটা আমাদের সূর্যের ক্ষতিকারক বিকিরণ (সোলার রেডিয়েশন) এবং মহাজাগতিক রশ্মি অনেক শক্তিশালী হয়ে পৃথিবীতে আঘাত করবে।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড্যান ল্যাথ্রপ মনে করেন, ‘পৃথিবীর চৌম্বক মেরু উল্টে যাওয়ার ঘটনা ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসে স্বাভাবিক। তবে এটি দ্রুত ঘটবে না এবং মানবজাতির জন্য তাৎক্ষণিক বিপর্যয়ের কারণ হবে না। তবে চৌম্বকক্ষেত্রের দুর্বলতা আমাদের স্যাটেলাইট ও যোগাযোগব্যবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে।’

চুম্বকক্ষেত্র উল্টে যাওয়ার ফলে প্রযুক্তিগত কিছু জটিলতা তৈরি হবে। চৌম্বকক্ষেত্রের দুর্বলতা স্যাটেলাইট, জিপিএস এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে।

অনেক প্রাণী যেমন পাখি এবং কচ্ছপ চৌম্বকক্ষেত্র ব্যবহার করে দিক ঠিক করে এবং সেই মতো চলাচল করে। মেরু উল্টে গেলে তাদের প্রজনন এবং অভিবাসন প্রক্রিয়ায় সমস্যা হতে পারে।

চৌম্বকক্ষেত্র দুর্বল হলে মাটির কাছাকাছি সূর্যের ক্ষতিকারক বিকিরণ পৌঁছাতে পারে। এটি দীর্ঘ মেয়াদে জীববৈচিত্র্যে প্রভাব ফেলতে পারে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, চৌম্বক মেরু উল্টে যাওয়া একটি স্বাভাবিক ভূতাত্ত্বিক ঘটনা। কিন্তু এটি ঘটতে হাজার বছর সময় লাগে। বর্তমানের গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর চৌম্বক মেরু কিছুটা সরে যাচ্ছে। এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা। তবে এটি খুব শীঘ্রই সম্পূর্ণ উল্টে যাবে এমন কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।

চৌম্বক মেরু উল্টে যাওয়ার প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইট এবং যোগাযোগব্যবস্থাকে আরো উন্নত করতে কাজ করছেন। এ ছাড়া বন্য প্রাণীদের ক্ষতি কমানোর জন্য গবেষণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ভূতত্ত্ববিদ গিলবার্ট ফ্রিডম্যান মনে করেন, ‘চৌম্বক মেরু উল্টে যাওয়ার সময়কালে চৌম্বকক্ষেত্রের দুর্বলতা সূর্যের ক্ষতিকারক বিকিরণ থেকে সুরক্ষায় কম কার্যকর হতে পারে। তবে বায়ুমণ্ডল আমাদের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, তাই আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।’

এই মন্তব্যগুলো থেকে বোঝা যায় যে, চৌম্বক মেরু উল্টে যাওয়ার ঘটনা স্বাভাবিক হলেও এর কিছু প্রভাব থাকতে পারে। তবে বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে সচেতন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

চৌম্বক মেরু উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা সত্য, তবে এটি খুব দ্রুত ঘটবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া এবং বিজ্ঞানীরা এর প্রভাব সম্পর্কে ধারণা রাখছেন। তাই আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই, বরং এর সম্ভাব্য পরিবর্তনগুলো বোঝার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর আস্থা রাখা উচিত।

সূত্র: লাইভ সায়েন্স

আরবি/ এইচএম

Link copied!