ঢাকা শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর, ২০২৪
তিন শিক্ষার্থী হত্যা

হাসিনাসহ ২৯ জনের নামে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৪, ০৮:০৮ পিএম

হাসিনাসহ ২৯ জনের নামে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ

ছবি, রূপালী বাংলাদেশ

ঢাকা; লক্ষ্মীপুর ও যাত্রাবাড়ীতে গণহত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুটি পৃথক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় নাগরিক কমিটির তত্ত্বাবধানে ও আইনি সহায়তায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে অভিযোগ দাখিল করেছেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত দুই শিক্ষার্থীর বাবা।

একটি অভিযোগে আসামি হিসাবে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আর অজ্ঞাত আসামি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১০০ থেকে ১৫০ সদস্য। আরেকটি অভিযোগে আসামি হিসাবে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। একটিতে ১ নম্বর আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আরেকটিতে ১ নম্বর আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

এছাড়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিএএফ শাহীন কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফকে হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরেকটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার চিফ প্রসিকিউটর বরাবরে আহনাফের মা জারতাজ পারভীন সাফাক এ অভিযোগ দায়ের করেন।

লক্ষ্মীপুর ও যাত্রাবাড়ীতে গণহত্যা : বৃহস্পতিবার দুপুরে নাগরিক কমিটির তত্ত্বাবধান ও আইনি সহায়তায় ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে অভিযোগ দুটি দাখিল করা হয়। পরে নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক কমিটির সদস্যদের সঙ্গে অভিযোগ দায়েরকারী দুই বাবা ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নাগরিক কমিটির প্রাথমিক কাজ হিসাবে ঘোষিত আট দফা কর্মসূচির দ্বিতীয় দফা ছিল ছাত্র-জনতার ওপর সংঘটিত নির্মম হত্যাযজ্ঞে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি নেওয়া।

এর বাস্তবায়নের জন্য নাগরিক কমিটি ছাত্র-নাগরিকের অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেওয়া শুরু করেছে। ছাত্র-নাগরিকের অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের শিকার দুজনের পরিবার আজ নাগরিক কমিটির মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে। এই দুই পরিবারকে অভিযোগ দায়ের প্রক্রিয়ায় আইনি সহায়তা করেছে নাগরিক কমিটি।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে গত ১৮ জুলাই ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালীর কাজলা পেট্রোল পাম্পের পাশের পকেট ফটকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের গুলিতে নিহত হন দনিয়া কলেজের বিএ (পাস) কোর্সের শিক্ষার্থী সাকিব হাসান।

আর গত ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুর শহরের উত্তর তেমুহনি এলাকায় গুলিতে নিহত হন চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র ওসমান পাটওয়ারী ওরফে ওসমান গণি। এই দুই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আজ নাগরিক কমিটির তত্ত্বাবধানে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

আসামিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩-এর ৩ (২) (এ), ৩ (২) (গ), ৩ (২) (এইচ), ৪ (১) ও ৪ (২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। সাকিব হাসানের বাবা মো. মর্তুজা আলম ও ওসমান গণির বাবা মো. আবদুর রহমান পৃথকভাবে অভিযোগ দুটি দায়ের করেছেন। যেসব শহিদের পরিবার এখনো আইনি লড়াইয়ে যুক্ত হয়নি কিংবা বিভিন্ন কারণে অভিযোগ দায়ের করতে পারেনি, তাদের ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে অভিযোগ দাখিল করতে আহ্বান জানিয়েছে নাগরিক কমিটি।

আরবি/এস

Link copied!