আইনের নানা মারপ্যাঁচ দেখিয়ে এবং অপ্রাসঙ্গিক কারণ দেখিয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক রাখাল রাহার বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করেননি। ফলে তৌহিদী জনতার মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এর আগে মতিঝিল থানায়ও অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছিল, তবে সেখানেও মামলা গ্রহণ করা হয়নি।
রোববার (০২ মার্চ) সকালে মামলার বাদী দুইজন আইনজীবীসহ সাইবার ট্রাইব্যুনালে গিয়ে যথাসময়ে মামলা জমা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে শুরুতেই নথি কর্মকর্তা জানান, বৈষম্য বিরোধী সংগঠনের কেউ বাদী হলে মামলার নথির বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি) অনুমোদন লাগবে। আইনজীবীরা পিপির কাছে গেলে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মামলা গ্রহণ করা সম্ভব নয়।
পরে আইনজীবীরা বাদীর পরিচয়ে পরিবর্তন এনে পুনরায় মামলা জমা দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তখন বলেন, পিপির অনুমতি ছাড়া এটি সম্ভব নয়। ফলে আইনজীবীরা আবারও পিপির কাছে যান, তবে পিপি এবার বিচারকের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
পরবর্তীতে একটি চলমান শুনানি শেষে আইনজীবীরা মামলার ফাইল অনানুষ্ঠানিকভাবে বিচারকের সামনে উপস্থাপন করেন।
বিচারক ফাইল হাতে নিয়ে মন্তব্য করেন, যেহেতু বাদী চট্টগ্রামের বাসিন্দা, তাই এই মামলাটি ঢাকায় গ্রহণযোগ্য নয়। আইনজীবীরা তখন যুক্তি দেন যে এটি একটি জাতীয় ইস্যু।
বিচারক জানান, বৈষম্য বিরোধীদের মামলার বিষয়ে আইন উপদেষ্টার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
আইনজীবীরা আরও কিছু কথা বলার চেষ্টা করলে বিচারক তাদের থামিয়ে দেন এবং অনাগ্রহের ভঙ্গিতে মামলার ফাইল ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘হবে না, হবে না! চট্টগ্রাম গিয়ে মামলা করুন।’
তবে বাদী এবং তার আইনজীবীরা হাল ছাড়তে রাজি নন। তারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সংগঠকের পরিচয় সরিয়ে দিয়ে পরদিন সকাল ১০টার দিকে পুনরায় মামলা জমা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।
এদিকে, আদালতের পক্ষ থেকে বাদীর মোবাইল ফোন জমা দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছে, যা তদন্ত চলাকালীন কোর্টে সংরক্ষিত থাকবে। এই সিদ্ধান্তে আরও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাদী ও তার সমর্থকরা।
উল্লেখ্য, গত সাতদিন ধরে বাদী থানা ও কোর্টে ন্যায়বিচারের আশায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এর আগেও তিনি বিভিন্ন জটিলতা পেরিয়ে আদালতের ছয়তলা পর্যন্ত উঠতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত মামলাটি গ্রহণ করা হয়নি।
এ ঘটনায় তৌহিদী জনতার মধ্যে অসন্তোষ চরমে পৌঁছেছে। তারা বলছেন, আইনের এই দুর্বল প্রয়োগ এবং বৈষম্যমূলক আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।
আপনার মতামত লিখুন :