ঢাকা সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫

ধর্ষণের শিকার ভিকটিমের ছবি-পরিচয় প্রকাশ করলেই গ্রেপ্তার

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৫, ১০:২০ পিএম
ছবিঃ সংগৃহীত

যদি কেউ ধর্ষণের শিকার ভিকটিমের ছবি বা পরিচয় গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে তাহলে তাকে আটক করতে পারবে পুলিশ।

এক্ষেত্রে ভিকটিম বা তার পরিবারকে অভিযোগ করতেও হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য প্রকাশকারীকে সাথে সাথেই আটক করতে পারবে। একই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতেও পাঠানো যাবে। আইনজ্ঞরা এমনটাই জানিয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া গণমাধ্যমকে বলেন, আমলযোগ্য ধারায় পুলিশের কাছে তথ্য এলেই আপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পারবে।

‘তথ্য যে কোনো সোর্স থেকে আসতে পারে। ভিকটিম কখন এসে থানায় অভিযোগ করবে, সে জন্য পুলিশকে অপেক্ষা করতে হবে না।’

২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারা অনুযায়ী, ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর পরিচয় সংবাদপত্রে বা অন্য কোন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ বা পরিবেশন করা যাবে না।

আর এই বিধান লংঘনের অনধিক দুই বৎসর কারাদণ্ডে বা অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

 

ওই আইন ছাড়াও ২০২৩ সালের সাইবার নিরাপত্তা আইনে অনুমতি ছাড়া ছবিসহ ব্যক্তির পরিচিতি প্রকাশকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

সাইবার আইনের ২৬(১) ধারায় বলা আছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি আইনগত কর্তৃত্ব ব্যতিরেকে অপর কোনো ব্যক্তির পরিচিতি তথ্য সংগ্রহ, বিক্রয়, দখল, সরবরাহ বা ব্যবহার করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।’

আর ২৬(২) ধারা মতে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’

ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের কোথাও বলা হয় নাই যে কোথায় প্রকাশ হলে সেটা প্রকাশ। বরং ফেসবুক, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক যেখানেই প্রকাশ করা হউক সেটা প্রকাশই। সোসাল মিডিয়া এখন কমিউনিটি জার্নালিজমের মধ্যেই পড়ে।’

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারা বৃহৎ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবাদ পত্রের পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউবসহ সকল মিডিয়ার উপরই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’

সম্প্রতি মাগুরায় আট বছরের একটি শিশুর ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে এমন আলোচনা সামনে এসেছে। ওই শিশুটির ছবি ও নাম-পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

এ নিয়ে আদালতের রিট হলে শিশুর ছবি–ভিডিও এবং নাম–ঠিকানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব প্ল্যাটফর্ম থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।

একই সঙ্গে আইনভঙ্গ করে শিশুর পরিচয় প্রকাশের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তিন কার্যদিবসের মধ্যে ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।