রাজধানীর মাতুয়াইল এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জেরে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার মামলায় আসামি মো. রফিকুল ইসলামকে (২৭) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোছাম্মৎ রোকশানা বেগম হেপীর আদালত এ রায় ঘোষণা দেন।
রফিকুল গাইবান্ধার ফুলছড়ি থানার গোপিনাথচরের আবুল কালামের ছেলে। রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয়মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। রায় ঘোষণা শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, আসামি যেভাবে একটি ছোট নিরপরাধ শিশুকে (৭) নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও হত্যা করেছে, তাতে তার এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার এবং পৃথিবীর আলো-বাতাস গ্রহণের কোনো অধিকার নেই। কারণ তার কাছে কোনো নারী ও শিশু নিরাপদ নয়। তাকে এই শাস্তির মাধ্যমে এই ট্রাইব্যুনাল সমাজের সকলের মাঝে এই দৃষ্টান্ত ও সংবাদ পৌঁছে দিতে চান যে, নারী ও শিশুদের প্রতি এই জাতীয় নৃশংস অপরাধের বিচার হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাদীর সাত বছর বয়সী মেয়ে ২০১৭ সালের ১ অক্টোবর ভোর ৬টায় বাড়ি পাশে বাথরুমে যায়। কিন্তু আধাঘণ্টা পরও ফিরে না আসায় ভুক্তভোগী শিশুর বাবা-মা তাকে খুঁজতে থাকেন।
পরে আসামি রফিকুল ভুক্তভোগী শিশুর বাবাকে ফোন করে জানান যে, শিশুটি তার কাছেই আছে। এরপর তারা আসামির বাড়ি গিয়ে ঘর তালাবদ্ধ দেখতে পান। পরে পুলিশের সহায়তায় আসামির ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে গিয়ে হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর বাবা যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন।
পরে মামলাটি তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন আসামি রফিকুল ভুক্তভোগীকে তার ঘরে নিয়ে যায়। তারপর সে ওড়না দিয়ে ভুক্তভোগীর মুখ পেঁচিয়ে ধরে। শিশুটি চিৎকার দিতে গেলে আসামি তার মুখ চেপে ধরে। এরপর পূর্ব শত্রুতার জেরে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর মুখে কম্বল চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রফিকুল।
২০১৯ সালের ১৫ মে মাসে মামলাটির চার্জ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করেন আদালত। মামলার বিচারের সময় চার্জশিটভুক্ত ১৬ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
আপনার মতামত লিখুন :