ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

দেড় মাসে জামিনে বেরিয়েছে ৪৩ শীর্ষ আসামী

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪, ০৪:৩৫ পিএম

দেড় মাসে জামিনে বেরিয়েছে ৪৩ শীর্ষ  আসামী

ছবি: সংগৃহীত

পালানো ৯০০ বন্দি এখনো অধরা

উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া ২৯টি অস্ত্র

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রায় দেড় মাসে ১৫ হাজারের মতো কারাবন্দি জামিনে মুক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪৩ জন আলোচিত বন্দি রয়েছেন। যারা শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি ও আলোচিত মামলার আসামি। আর দেশের বিভিন্ন কারাগারে হামলার ঘটনায় ২ হাজারের মতো বন্দি পালিয়ে গিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন, আবার অনেককে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে।

পলাতকদের মধ্যে ৯০০ বন্দি এখনো অধরা রয়েছেন। হামলার ঘটনাগুলোয় ৮৪টি অস্ত্র লুট করা হয়েছিল। যার মধ্যে ২৯টি অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি। গতকাল মঙ্গলবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।

পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি-মন্ত্রীসহ যেসব হেভিওয়েট গ্রেপ্তার হচ্ছেন, তারা ডিভিশন পাচ্ছেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে আইজি প্রিজন বলেন, কে ডিভিশন পাচ্ছেন আর কে পাচ্ছেন না, সেটি বলা মুশকিল। তবে কারা বিধি অনুযায়ী যারা সরকারি কর্মকর্তা থাকেন, তারা এমনিতেই ডিভিশন পেয়ে থাকেন। আর যারা সরকারি কর্মকর্তা নন তাদের ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতির প্রয়োজন হয়। অথবা নিয়ম মেনে কারা কর্তৃপক্ষকে আবেদন দিতে হয়। কারা কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ওই আবেদন পাঠায়। পরে যদি সেখান থেকে যাচাই-বাছাই শেষে অনুমতি দেয় তখন কারা কর্তৃপক্ষ ডিভিশন দিয়ে থাকে। বর্তমানে কারাগারে ৩৭ জন বিশেষ বন্দি রয়েছেন। যাদের মধ্যে ৯ জন ডিভিশন পাচ্ছেন। তবে ওই ৯ জন কারা সেটি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।

তিনি বলেন, ‘আমরা বহিপ্রভাবমুক্তভাবে কারাগার প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছি। কারণ আমাদের এখন একটাই লক্ষ্য-শৃঙ্খলা ও দুর্নীতিমুক্ত কারাগার প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য যারা দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নিত্যদিনের কার্যক্রমে যে অনিয়ম সেগুলো নিয়েও কাজ করছি। সৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদায়ন করছি। বারবার একই জায়গায় থাকা কর্মকর্তাদের আগের মতো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। মাদকের আগ্রাসনসহ বিভিন্ন দুর্নীতির কথা শুনেছি। আমাদের পরিষ্কার কথা, মাদকাসক্ত বা মাদক কারবারে জড়িত কেউ কারাগারে চাকরিরত থাকতে পারবে না।

কারাপ্রধান বলেন, আপাতত মোটা দাগের অনিয়মগুলো সমাধানে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। কারাগার পরিশোধিত হবে, এটাই প্রত্যাশা। যুগোপযোগী কারা আইন সংস্কার, জনবল বৃদ্ধি, কারা অভ্যন্তরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য জ্যামার কেনাসহ মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে আইজি প্রিজন আরও বলেন, দেশের ৬৮ কারাগারের ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার। বর্তমানে বন্দি রয়েছে ৫০ হাজারের বেশি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ১৭টি কারাগারে হামলার চেষ্টা করে হলেও আক্রান্ত হয় ৮টি। ৫টি কারাগার থেকে বন্দি পালিয়ে যায়। যাদের মধ্যে ৭০ জন জঙ্গি এবং ২৮ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও যাজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি রয়েছে। এসব ঘটনা প্রতিহত করতে গিয়ে কারাগারের বিভিন্ন পর্যায়ের ২৮২ জন সদস্য আহত হয়েছিলেন। অনেকে এখনো বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা কাজ করছে বলেও জানান আইজি প্রিজন।

আরবি/জেআই

Link copied!