ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

হারুনের ‘আদালত’ বন্ধ, স্বস্তিতে শোবিজ তারকারা

মেহ্দী আজাদ মাসুম

প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৪, ০১:১০ পিএম

হারুনের ‘আদালত’ বন্ধ, স্বস্তিতে শোবিজ তারকারা

ডিবি কার্যালয়ে ডিআইজি হারুন অর রশিদের সঙ্গে চিত্রনায়িকা নিপুণ। ছবি: ফেসুবক থেকে নেয়া

দেশের শোবিজ জগতের জনপ্রিয় তারকারা কখনো নির্মাতা, প্রযোজক, কখনো সাংবাদিক, আবার কখনো বসবাসকারী এলাকায় কোনো প্রকার সমস্যায় পড়লেই সোজা ছুটে যেতেন ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের দায়িত্বে থাকা (মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার) আলোচিত-সমালোচিত হারুন-অর-রশীদের কাছে। পলাতক থাকা এই পুলিশ কর্মকর্তা কালক্ষেপণ না করে ভাব জমাতেন। তারপর পাইকপেয়াদা পাঠিয়ে পাকড়াও করে নিয়ে আসতেন তারকাদের প্রতিপক্ষকে। চলত হারুনের আদালতে শুনানি। ভাতের হোটেলে খাওয়া-দাওয়ার পর নায়িকা-মডেলদের অযৌক্তিক আবদার জেনেও রায় দিতেন এদের পক্ষেই। তারপর হয়ে যেত আরও ঘনিষ্ঠতা। রাতের আঁধার নেমে এলে তারকাদের নিয়ে যাওয়া হতো বোটক্লাবে, কখনো গাজীপুর অথবা মুন্সীগঞ্জের নাম করা প্রথম শ্রেণির রিসোর্টে। কখনো আবার একই পেশার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উপভোগেও পাঠানো হতো।

ডিবির হারুনের সঙ্গে চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। ছবি: সংগৃহীত

শোবিজের সেসব নায়িকারা এখন অনেকটা স্বস্তিতেই আছেন। রাতের আঁধারে স্বামী-সন্তান-পরিবার রেখে ছুটতে হচ্ছে না হারুনের রঙ্গশালায়।  

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ডিবির সমালোচিত এই হারুনের আর খোঁজ মেলেনি। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি পলাতক অথবা আটক রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে।  

ডিবির হারুনের সঙ্গে নায়িকা তানজিন তিশা। ছবি: সংগৃহীত

একাধিক নায়িকা ও মডেল নাম প্রকাশ না করার শর্তে রূপালী বাংলাদেশের এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘না বুঝে অথবা লিগ্যাল জাস্টিস পেতে আমার মতো যারা হারুনের ‘আদালত’ অথবা ভাতের হোটেলে গেছেন, খেয়েছেন, অন্তরঙ্গ সময় কাটিয়েছেন, তারা আর তার (হারুনের) কাছ থেকে সরে আসতে পারেননি। হারুনের ডাকে তাদের সাড়া দিতেই হতো। কখনো ভয় দেখিয়ে আবার কখনো বড় অংকের টাকার অফারে। শুধু দেশেই নয়, পাঠাতেন দেশের বাইরেও।  

ডিবির হারুনের সঙ্গে আরফান নিশো,  চিত্রনায়িকা তমা মির্জা, পরিচালক রায়হান রাফি  ও প্রযোজক আরশাদ আদনান। ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্র ও মডেলিংয়ের জনপ্রিয় এক নায়িকা, পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাথিত বান্ধবী, যার নামের প্রথম অক্ষর ‘জা’ দ্বিতীয় অংশের শেষ শব্দ ‘তু’ এই প্রতিবেদকে বলেন, ‘এখন আমাদের সময় এসেছে সত্য বলার কিন্তু লোক-লজ্জায় সত্য বলা সম্ভব নয়।’ তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের এক নারী নাট্য নির্মাতাকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘সেই নির্মাতা হারুনের ডাকে সারা দেওয়ায় তারকাদের উদ্বুদ্ধ করতেন।’ আলোচিত এই নারী নির্মাতার স্বামী একজন গণমাধ্যমকর্মী বলেও জানান তিনি।

ডিবির হারুনের সঙ্গে ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক শাকিব খানসহ অন্যারা। ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানের সাবেক স্ত্রী অপু বিশ্বাসকে প্রায়ই দেখা যেত হারুনের দরবারে। কারণে-অকারণে তিনি যেতেন ডিবি অফিসের পুরনো দোতালা ভবনটিতে। হারুনের আদালত ও ভাতের হোটেলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমি অতি প্রয়োজন ছাড়া কখনোই যাইনি। তাও গেছি হবে হয়তো দু-একবার।

ডিবির হারুনের সঙ্গে শিশু অভিনেত্রী সিমরান লুবাবা। ছবি: সংগৃহীত

কারা যেত, কেন যেত, তা আমার জানা নেই। আমাকে কখনো জোর করে তিনি ডাকেননি।’ ইচ্ছে করলেই নায়িকারা না গিয়েও পারতেন বলে মনে করেন তিনি।

আরবি/জেডআর

Link copied!