ঢাকা বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫

শীতে বয়স্কদের সমস্যা ও প্রতিকার

মিনহাজুর রহমান নয়ন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৫, ০৬:৩১ পিএম

শীতে বয়স্কদের সমস্যা ও প্রতিকার

ছবি: সংগৃহীত

শীতকাল। এই ঋতুতে নানা সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে প্রবীণদের মধ্যে। কী সেই সমস্যা, কোন পথেই বা পাওয়া যাবে মুক্তি? উত্তর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিশ্বাস আক্তার হোসেন। 
এমনি শীতকাল তার ওপর ফ্যান বন্ধ। অনেকেই এই আবহাওয়াতে খাপ খাওয়াতে পারছেন না। এই হিম শীতল আবহাওয়া অনেক মানুষের জন্যই হয়ে ওঠে ভীষণ বেদনার। এই তালিকায় একদম উপরেই থাকবেন প্রবীণরা। এই সময় তারা খুবই সমস্যায় পড়তে পারেন বলেই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তবে শুধু শুধু ভয় পেয়ে লাভ নেই। বরং সম্মুখতার আগে প্রস্তুতি নিতে হবে। তাই আসুন এই সময়ের কয়েকটি সমস্যা ও তা থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-

শ্বাসের সমস্যা
শীতে বয়স্কদের প্রধান সমস্যা হলো শ্বাসজনিত। এ সময় শ্বাসনালীর প্রদাহ বাড়ে। এ ছাড়া যাদের সিওপিডি রয়েছে তাদের সমস্যাও এই সময়ে অনেকটাই বেড়ে যায়। এ ছাড়া সর্দি-কাশি তো আছেই। তাই এই ঋতুতে বয়স্কদের মধ্যে নিউমোনিয়ার প্রবণতাও অনেকটাই বাড়ে। এ নিয়ে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।

শীতে ব্যথা বাড়ে
বয়স্কদের মধ্যে ব্যথার প্রবণতা অনেকটাই বেশি। আর শীতকালে এই ব্যথা আরও বাড়ে। বিশেষত, অস্টিও আর্থ্রাইটিস, রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস ইত্যাদির ব্যথা বেশ কিছুটা বাড়ে। এই ধরনের সমস্যা বাড়ার কারণ হলো শীতে প্রবীণরা বেশি নড়াচড়া করতে পারেন না।

ত্বকের সমস্যা
এই ঋতুতে কম বয়সীদের ত্বকের নানান সমস্যা দেখা যায়, সেখানে বয়স্কদের সমস্যা হওয়া তো স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে চুলকানি, ত্বক ফেটে যাওয়া, রক্ত বেরনো, ঘা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।

মানসিক সমস্যা
শীত এবং অবসাদ অনেক ক্ষেত্রেই সমান। তাই এই ঋতুতে দেখা যায় প্রবীণদের মধ্যে বাড়ছে অবসাদ।

স্ট্রোক ও হার্ট-অ্যাটাক
শীতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেড়ে যায় রক্তচাপ। আর এই রক্তচাপ বাড়ার কারণেই স্ট্রোক ও হার্ট-অ্যাটাক বাড়ে বলে বিভিন্ন পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে।

কোষ্ঠকাঠিন্য
শীতে পানি খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়। পাশাপাশি কমে যায় হাঁটাচলা। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য মাথাচাড়া দেয়।  

হাত-পা নীল হয়ে যাওয়া
প্রচণ্ড ঠান্ডায় থাকলে শরীরের বিভিন্ন অংশের রক্তনালীর মধ্যে রক্তচলাচল ব্যাহত হয়। তখন সেই অংশ নীল হয়ে যায়।

উইন্টার ডায়রিয়া
শীতে বয়স্কদের মধ্যে দেখা দিতে পারে উইন্টার ডায়রিয়া। বমি, পায়খানা হয়। তাই সবাধান।

হাইপোথার্মিয়া
খুব শীতে শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। এই সমস্যার নাম হাইপোথার্মিয়া। তখন নিতে হবে দ্রুত ব্যবস্থা।

ছত্রাকজনিত সমস্যা
শয্যাশায়ীদের পরিচর্যার অভাবে ছত্রাক আক্রমণ হতে পারে। তাই জামা-কাপড় ভালোভাবে পরিষ্কার করে রাখতে হবে।

শীতের সচেতনতা সম্পর্কে ডা. বিশ্বাস বলেন-
*শীতে খুব ভোরে বা মধ্যরাতে বাইরে বের হওয়া উচিত না। একান্তই বেরতে হলে সারা শরীর ভালো করে ঢেকে বের হন।
*অকারণে শীতের কাপড় পরা যাবে না।
*বাড়িতে বা বাসায় মোজা পরুন।
*শীতে বাড়ির বিছানার চাদর, বালিশ নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে।
*নিজের ওষুধ খান।
*সারা দিন রুম হিটার চালিয়ে রাখবেন না।
*গোসল করতে হবে। প্রয়োজনে একটু উষ্ণ পানিতে গোসল করুন।
*প্রতিদিন মলত্যাগ করতে হবে। বাড়ির লোকদের উচিত বয়স্কদের খেয়াল রাখা।
*গরম পানির ভাপ নিন। শুকনো কাশি, গলা ব্যথা কমবে।
*মাস্ক পরুন। ধুলাবালি ও ময়লা থেকে দূরে থাকুন।
*প্রেশার, সুগার নিয়মিত মাপুন।
*পানি পান করুন পর্যাপ্ত।
*কোনো গুরুতর সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অবহেলা করবেন না

আরবি/এস

Link copied!