একদিকে শীত বলছে যাব যাব। অন্যদিকে, বসন্তের মৃদু বাতাসে হালকা ফুলের গন্ধ, হাওয়ায় ঝরাপাতার কোমল স্পর্শ আর গাছের ডালে ডালে ফুলের খেলা। শীতের পোশাকগুলো আলমারিতে তুলে রাখার সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়জনকে হাতে ফুল দিয়ে চমকে দেওয়ার ব্যস্ততা শুরু হলো।
কিন্তু ফুল যে শুধু প্রিয়জনের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ কিংবা ঘরের শোভাবর্ধনই করে না, ফুল শরীরও ভালো রাখে। সোজা কথা, এই সময় বেশকিছু ফুল আছে আমাদের চারপাশে যা রান্না করে খেলে শরীর ভালো থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। সবজি-ফল নিয়ে তো অনেক আলোচনা হয়েছে। চলুন এবার এখন জেনে নিই খাবার পাতে ফুলের গুণ।
শরীরের সজনে
এই সময় পক্স, সর্দিকাশির প্রবণতা বাড়ে। সজনে ফুল দিয়ে তরকারি বানিয়ে খেলে তা শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ায়। সজনে ফুলে ভিটামিন এ, বি১, বি২, বি৩ এবং ভিটামিন সি, এ ছাড়া আয়রন, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম ক্যালসিয়াম রয়েছে। সজনে ডাঁটা, ফুল, পাতা খেলে নানা অসুখ থেকে আমরা বাঁচতে পারি, অ্যান্টি অক্সডেন্টে ভরপুর সজনে ফুল ডেঙ্গুর সঙ্গে লড়াই করে। অ্যাজমা থাকলে সজনে ফুল সেবন করলে রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
কুমড়া ফুলে ক্যালসিয়াম
কুমড়া যেমন পুষ্টিগুণে ভরপুর তেমনি কুমড়া ফুলের গুণও কম নয়। এ ফুল আমরা বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকি। এই ফুলে থাকে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন সি যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আয়রন শোষণে সাহায্য করে, এতে ফাইবার পাওয়া যায়, যা হজম সমস্যাকে দূর করে। ভিটামিন রয়েছে যা ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখে ও চোখের জন্য উপকারী। ক্যালসিয়াম, ফসফরাস থাকায় হাড়কে সুস্থ মজবুত করে তোলে। অস্টিওস্পোরোসিস রোগ প্রতিহত করতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
অ্যান্টিবায়োটিক নিমফুল
নিমফুল খুবই উপকারী, এতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যি রয়েছে, এটি অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদানে সমৃদ্ধ। অ্যান্টি সেপটিক গুণ আছে যা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। নিমফুলের শরবত পান করলে এটি রক্তকে পরিশুদ্ধ করে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে।
গ্যাসের সমস্যায় বকফুল
বকফুলের অনেক উপকারিতা আছে, এর মধ্যে ফাইবার, প্রোটিন, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন সি, বিভিন্ন খনিজ আছে। এতে ক্যানসার প্রতিরোধক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। এর মধ্যে আয়রন, ভিটামিন বি উপস্থিত। ঋতু পরিবর্তনের সময় এই ফুল খেতে পারলে খুব ভালো, এতে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ে। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূরীকরণে সহায়তা করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা কমায়। এই ফুলগুলোর উপকারিতা অনেক।