ঢাকা শনিবার, ০১ মার্চ, ২০২৫

রমজানের ঐতিহ্য খেজুর

মির্জা হাসান মাহমুদ
প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২৫, ০৫:১৪ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

ইফতারের টেবিলে খেজুর না থাকলে যেন পূর্ণতা আসে না। পবিত্র রমজান এলে খেজুরের কদর বিশ্বব্যাপী বেড়ে যায়। রোজাদাররা সুন্নত হিসেবে খেজুর দিয়ে ইফতার করেন, কারণ হাদিস অনুযায়ী, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তাই এটি শুধু খাদ্য নয়, বরং মুসলিম ঐতিহ্যের অংশ। মরু অঞ্চলের প্রধান ফল হওয়ায় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে খেজুরের ব্যাপক উৎপাদন হয়। পৃথিবীতে প্রায় দুই শতাধিক জাতের খেজুর রয়েছে, প্রতিটির স্বাদ, রং ও আকৃতি ভিন্ন।

বিশ্বের জনপ্রিয় কিছু খেজুরের জাত

আজওয়া
আজওয়া খেজুরকে বলা হয় ‘পবিত্র খেজুর’, যা মূলত মদিনায় উৎপন্ন হয়। কালো বা গাঢ় বাদামি রঙের এই খেজুর সুস্বাদু, নরম ও অত্যন্ত পুষ্টিকর। হাদিসে বর্ণিত আছে, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালবেলা সাতটি আজওয়া খাবে, সেদিন কোনো বিষ ও জাদু তার ক্ষতি করবে না।’ (বুখারি, হাদিস: ৫৪৪৫) তাই এটি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষভাবে জনপ্রিয়।

মেডজুল
মেডজুল খেজুরকে বলা হয় ‘রাজকীয় খেজুর’। এটি আকারে বড়, গাঢ় বাদামি ও অত্যন্ত রসাল। এর স্বাদ মধুর মতো মিষ্টি এবং এটি প্রাকৃতিক শক্তির উৎকৃষ্ট উৎস।

খালাস
সৌদি আরবের অভিজাত খেজুরের মধ্যে খালাস অন্যতম। এটি ডিম্বাকৃতির, গাঢ় বাদামি ও মিষ্টি গন্ধযুক্ত। সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলে বেশি উৎপাদিত হয় এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে এটি পরিবেশন করা হয়।

সুকারি
সুকারি খেজুরের স্বাদ মিছরির মতো মিষ্টি হওয়ায় একে ‘রাজকীয় খেজুর’ বলা হয়। এটি আঁশজাতীয় খাবারের একটি বড় উৎস এবং আরবদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।

মরিয়ম বা কালমি
কালচে বাদামি রঙের মরিয়ম খেজুর দেখতে ডিম্বাকৃতির। এটি তুলনামূলকভাবে কম মিষ্টি কিন্তু অত্যন্ত সুস্বাদু।

সাগাই
সাগাই খেজুরের এক অংশ নরম, আরেক অংশ কুঁচকানো ও শুকনো। এর স্বাদ লাল চিনির মতো এবং এটি অন্য খেজুরের তুলনায় কিছুটা ব্যতিক্রমী।

ইফতারে খেজুরের উপকারিতা
খেজুর তাৎক্ষণিক শক্তি দেয় এবং শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। এতে থাকা আঁশ হজমে সহায়তা করে, আয়রন রক্তস্বল্পতা দূর করে, আর পটাশিয়াম হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ায়। ইফতারের শুরুতেই খেজুর খাওয়া শুধু সুন্নতই নয়, স্বাস্থ্যগতভাবেও অত্যন্ত উপকারী। তাই রমজান মাসে ইফতার আয়োজনে খেজুর থাকা চাই-ই চাই!