ঢাকা সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫

মাসে এক ইঞ্চি পর্যন্ত উচ্চতা বাড়ানো সম্ভব!

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১১, ২০২৫, ১১:৪০ এএম
প্রতীকী ছবি

উচ্চতা নির্ভর করে অনেকগুলো বিষয়ের ওপর। যদি কারও উচ্চতা জিনগত কারণে কম না হয় এবং শরীরে হরমোনজনিত কোনো সমস্যা না থাকে, তাহলে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন উচ্চতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এটি শুধুমাত্র তখনই সম্ভব, যখন একজন মানুষের উচ্চতা বাড়ার বয়স এখনো শেষ হয়নি।

বয়স পেরিয়ে গেলে, শুধুমাত্র জীবনধারা বদলে উচ্চতা আর বাড়ে না। কিন্তু বয়স অনুকূলে থাকলে, পুষ্টিকর খাবার, নিয়মিত শরীরচর্চা ও সঠিক ঘুমের মাধ্যমে উচ্চতা বাড়ানো সম্ভব। অনেকের ক্ষেত্রেই এই বয়সে প্রতি মাসে এক ইঞ্চি পর্যন্ত উচ্চতা বাড়তে দেখা যায় এমনটাই জানাচ্ছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মতলেবুর রহমান। 

কীভাবে বাড়ে উচ্চতা?

আমাদের হাড়ের প্রান্তে থাকা ‘গ্রোথ প্লেট’ যত দিন খোলা থাকে, তত দিন উচ্চতা বাড়তে পারে। সাধারণত ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সের মধ্যে এই প্লেট বন্ধ হয়ে যায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ২০ বছর পেরোনোর পরও এটি সক্রিয় থাকতে পারে।

পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস জরুরি

শিশু ও কিশোরদের জন্য দুধ, ডিম, মাছ, মাংস এবং কাঁটাসহ ছোট মাছ খুবই উপকারী। সঙ্গে বীজ, ডাল, শাকসবজি ও টাটকা ফলমূল রাখা উচিত প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। এই বয়সে সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলাটা ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগের মতো।

নিয়মিত শরীরচর্চার প্রয়োজন

শিশুদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করা উচিত। ঝুলন্ত ব্যায়াম, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা কিংবা স্ট্রেচিং জাতীয় ব্যায়াম উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। যোগব্যায়াম ও উপকারী হতে পারে। শরীর সক্রিয় রাখার জন্য ছোটাছুটি, দৌড়ঝাঁপ তো থাকবেই।

ঘুম ও রোদ গুরুত্বপূর্ণ

লম্বা হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। কারণ ঘুমের সময়েই গ্রোথ হরমোন সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। পাশাপাশি রোদে থাকার মাধ্যমে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, যা ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে এবং হাড়ের বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।

দেহভঙ্গির প্রভাব

সঠিক ভঙ্গিতে দাঁড়ানো, হাঁটা, বসা ও শোয়া উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যক্তিত্বেও প্রভাব ফেলে। ভারী ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে হাঁটা, নুয়ে কাজ করা ইত্যাদি অভ্যাস উচ্চতা বৃদ্ধিতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সতর্কতা

যদিও প্রাপ্তবয়স্কদের উচ্চতা বাড়ার সুযোগ নেই, তবে দেহভঙ্গি, সঠিক খাবার ও সক্রিয় জীবনযাত্রা বজায় রাখলে হাড়ের ঘনত্ব ঠিক থাকে এবং উচ্চতা কমে যাওয়ার ঝুঁকি কমে। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি–এর অভাব হাড় দুর্বল করে দিতে পারে।

ভুল ধারণা নয়

মনে রাখা জরুরি, কোনো হেলথ ড্রিংক উচ্চতা বাড়াতে পারবে না। বরং উচ্চতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যদি হরমোনজনিত সমস্যা থাকে, তাহলে তা নির্দিষ্ট বয়সের মধ্যেই চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে। বয়স পেরিয়ে গেলে, চিকিৎসাও আর ফল দেবে না। আর যদি জিনগত কারণে উচ্চতা সীমিত হয়, তাহলে তা খুব একটা বদলানো সম্ভব নয়।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, উচ্চতা নিয়ে দুশ্চিন্তার চেয়ে স্বাস্থ্যকর জীবনধারার ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত। উচ্চতা বাড়ুক বা না বাড়ুক, সুস্থতা এবং আত্মবিশ্বাসই আসল