সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে বরাবরই কার্যকর যোগাযোগের বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কারণ দুজনের মধ্যে ঠিকমতো যোগাযোগ, তালমিল না হলে খিটিমিটি লেগে যেতে পারে। সমস্যা সমাধানের বদলে শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ অ্যারাবেলা রাসেল কয়েকটি আচরণের কথা বলেছেন; যার কারণে দুজনের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদে সমস্যা তৈরি হতে পারে।
শোনার ভান করা
সম্পর্কের শুরুতে যখন দুজনের মধ্যে আকর্ষণ বেশি কাজ করে, তখন পরস্পরের সব কথা শোনার জন্য উত্তেজনা কাজ করে। কিন্তু ওই আকর্ষণ যখন কাজ করে না, তখনও পরস্পরের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। অনেক সময় দেখা যায়, একজন কথা বলছেন অথচ আরেকজন শোনার ভান করছেন কিন্তু গুরুত্ব দিয়ে তার কথা শুনছেন না। সঙ্গী যখন কিছু বলেন, তখন তাকে গুরুত্ব না দিলে সম্পর্কের ক্ষতি হতে শুরু করে। সুখি সম্পর্কের জন্য তাই সঙ্গীর কথায় আগ্রহ দেখানো গুরুত্বপূর্ণ।
নিজের জন্য সময় না থাকা
অনেকে নিজের জন্য কোনো সময় রাখেন না, এটি ঠিক নয়। সঙ্গীকে নিয়েই পুরোটা সময় কাটানোর বদলে নিজের জন্যও কিছুটা সময় বরাদ্দ রাখুন। দুজনের মধ্যে সামান্য দূরত্ব রাখা সুন্দর সম্পর্কের জন্য জরুরি। রাসেল বলেন, পৃথক বিষয়ে আগ্রহ রাখা সুখি সম্পর্কের জন্য মূল উপাদান। পৃথক বিষয়ে আগ্রহ না থাকলে দুজনের মধ্যে দম বন্ধ হওয়া পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে এবং কথা বলার মতো বিষয় খুঁজে পাওয়া যায় না। পৃথক বিষয়ে আগ্রহ থাকলে দুজনের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
জনসম্মুখে হেয় করা
অনেকে না বুঝেই বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সঙ্গীকে নিয়ে হাসি-তামাশা করেন। দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ঠিক রাখতে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মানিয়ে চলতে হয়। জনসম্মুখে কেউ ছোট হন বা হেয় হতে পারেন, এমন কথা বলার আগে অবশ্যই ভেবেচিন্তে বলতে হবে। তা না হলে সম্পর্কের মধ্যে চিড় ধরতে শুরু করে।
ধারণা করে বসা
কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সঙ্গীকে জিজ্ঞাসা করা প্রয়োজন। দীর্ঘদিনের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সঙ্গীকে কোনো বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার আগে অনেকেই তার চিন্তা, মত ও অনুভূতি সম্পর্কে ধারণা করে বসেন। সম্পর্কের উন্নতির জন্য দুজনের মধ্যে যোগাযোগ জরুরি। ধারণা করলে দুজনের মধ্যে কার্যকর যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় বলে এটিকে বিপদ বলে মনে করেন যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ রাসেল।
সঙ্গীকে সময় না দেওয়া
অনেকেই বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন নিয়ে এতটাই ব্যস্ত থাকেন যে সঙ্গীর কথা খেয়াল থাকে না। অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। সম্পর্কের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, সঙ্গীকে যেন যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়। এতে পরস্পরের যত্ন করার বিষয়টি অনুভব করতে পারবেন। সম্পর্ক দৃঢ় হবে।
নিজের মেজাজ অন্যের ওপর
অনেক সময় একেকজনের মেজাজ একেকরকম হতে পারে। মেজাজের জন্য তাই সঙ্গীকে দোষ দিতে নেই। ‘তোমার জন্য আমার এমন হলো’ বলে দোষারোপ করা ঠিক নয়। নিজের অনুভূতির জন্য নিজের ওপরই ভরসা করা উচিত। মেজাজের বিষয়টি নিয়ে সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন। মনে রাখবেন, সামান্য একটু পরিবর্তন ইতিবাচক ফল আনে।
বেশি সমালোচনা
যখন-তখন সঙ্গীর সমালোচনা করা ঠিক নয়। মনে রাখবেন, সবচেয়ে উদ্বেগহীন ব্যক্তিটিও বারবার সমালোচনায় বিরক্ত হন। রাসেল বলেন, সঙ্গী কোনো ভুল করলে বারবার তাকে দোষারোপ করলে বাজে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এতে সঙ্গী তখন এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। যখনই সঙ্গীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়, তখনই মনে হয় নেতিবাচক কথা শুনতে হবে। কোনো বিষয় নিয়ে বিরক্ত হলে খোলামেলা আলোচনা করা উচিত। আলোচনাতেই সমাধান পাবেন।
আপনার মতামত লিখুন :