সারা দিনের প্রায় অর্ধেকের বেশি সময় কেটে যায় অফিসে। তাই অফিস ডেস্কে কিছুটা সবুজের ছোঁয়া থাকলে শরীর, মন দুটোই প্রফুল্ল ও চাঙ্গা থাকে। তবে বেশিরভাগ অফিসেই যেহেতু এখন সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনার থাকে; তাই আলো-বাতাস ভেতরের একেবারেই চলাচল করে না বললেই চলে। তাই অফিস ডেস্কে এমন গাছ রাখতে হবে, যা এই পরিবেশে খাপ খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে। চলুন জেনে নেই, কোন গাছ অফিস ডেস্কে রাখলে মানসিক প্রশান্তি আসবে—
মানিপ্লান্ট
মানিপ্লান্ট শুধু মাটিতে নয়। পানিতেও শেকড়সহ বেড়ে উঠতে পারে এবং বিশেষ যত্ন ছাড়াই লতানো পাতায় বড় হতে থাকে। অফিস ডেস্কের আশপাশে এই গাছের লতানো পাতা ছড়িয়ে দিলে তা দেখতে বেশ সুন্দর লাগে। এ ছাড়াও, কাজের টেবিলে মানিপ্লান্ট রাখলে মনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি রোদ এবং পানি ছাড়াই অন্য গাছের ছায়ায়ও বেঁচে থাকতে পারে। এমনকি অন্ধকার ঘরেও টিকে থাকে বলে একে ডেভিলস আইভি বলা হয়।
পিস লিলি
পিস লিলি আকারে ছোট, কিছুটা লতানো এবং দেখতে সুন্দর হওয়ায় অফিসে রাখা যায়। এর গাঢ় সবুজ পাতা এবং মাঝে মাঝে ফোটা শুভ্র ফুল মনকে প্রশান্তি দেয়। ফুল বিবর্ণ হয়ে এলে বৃন্তসহ তা কেটে ফেলতে হয়। সূর্যের আলো, সার, পানি ছাড়াই বেঁচে থাকতে পারে পিস লিলি। যদি ফুল না ফোটে, তবে কিছুটা উজ্জ্বল আলোতে রাখা যেতে পারে। কিন্তু সরাসরি সূর্যালোকে নয়। এর রস কিছুটা বিষাক্ত, তাই ফুল বা পাতা ছাঁটাইয়ের পর ভালোভাবে হাত ধুতে হবে।
জিজি প্লান্ট
জিজি প্লান্টের গাঢ় সবুজ পাতা অফিস ডেস্কে রাখলে প্রশান্তি এনে দেবে। এই গাছের যত্ন নিয়ে বেশি চিন্তা করতে হবে না। অল্প আলোতে বেঁচে থাকতে পারে এবং খুব বেশি পানির প্রয়োজন হয় না। তবে মাটি শুকিয়ে গেলে পানি দিতে হবে। দেখতে আকর্ষণীয় এই গাছটি ঘরকে বায়ুদূষণ এবং অ্যালার্জির প্রভাব থেকে মুক্ত রাখে।
পেপেরোমিয়া
পেপেরোমিয়া গাছের পাতাগুলো উজ্জ্বল এবং আকর্ষণীয়। পাতার বেগুনি, সবুজ, লাল রঙের কিনারা, তরমুজের মতো ডোরাকাটা দাগ এবং ঢেউখেলানো আকার দেখতে ভালো লাগে। এই গাছটি অফিস ডেস্কে রাখলে ডেস্কের সৌন্দর্য অনেকগুণ বেড়ে যায়।
স্পাইডার প্লান্ট
স্পাইডার প্লান্টের বিশেষত্ব হলো এটি খুব অল্প আলোতেও সালোকসংশ্লেষণ করতে পারে। ফলে অক্সিজেনের জোগান অব্যাহত রাখে। এটি স্টাইরিন, গ্যাসোলিন জাতীয় দূষিত বাতাস শোষণ করে, তাই অফিস ডেস্কে অন্য গাছের সঙ্গেও রাখা যেতে পারে। কিছু পানি আর পাথর দিয়ে সিরামিক বা কাচের পাত্রে রাখলে এটি অফিসের সৌন্দর্য অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়।
হার্টলিফ ফিলোডেনড্রন
হার্টলিফ ফিলোডেনড্রন গাছের লতা লম্বায় ৪ ফুট বা তার বেশি হতে পারে। এই গাছটি অন্ধকারেও ভালোভাবে বেড়ে ওঠে। টবে মাটি বা বোতলে পানিতেও সহজেই টিকে থাকতে পারে। ৪-৫ দিন পরপর বোতলের পানি বদলে দিতে হবে এবং অতিরিক্ত লম্বা লতা ও মরা পাতা ছেঁটে ফেলতে হবে।
স্নেক প্লান্ট
স্নেক প্লান্ট খুব সহজে পাওয়া যায় এবং এর বিভিন্ন ধরন রয়েছে। আপনার পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন। এই গাছের যত্ন নেওয়া সহজ। মাটি একেবারে শুকিয়ে গেলে তবেই পানি দিতে হবে। বেশি আলো বা পানির প্রয়োজন হয় না এবং এটি সহজে মরে না। তাই অফিসে রাখার জন্য এটি সবচেয়ে উপযুক্ত গাছ।
আপনার মতামত লিখুন :