শীতে ঘুরাঘুরিতে অন্যরকম মজা। এ সময় বাইকাররা বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করে থাকেন। ঢাকার বাইরে ঘুরাঘুরি তো আছেই, ঢাকার বিভিন্ন জায়গায়ও দিনে বা রাতে ঘুরতে বের হন অনেকে। তবে শীতে সকাল বা সন্ধ্যা-রাতে বাইকে ঘুরতে বের হলে সচেতন থাকা উচিত। নয়তো যেকোনো সময় ঠান্ডা-কাশি-জ্বর-সর্দি হয়ে পারে।
ঠান্ডা-কাশি-জ্বর-সর্দি এমন একটি সমস্যা যা বাইকারদের জন্য বেশ বিরক্তিকর। দীর্ঘ সময় বাইকে চলাচল করার ফলে বাইকাররা প্রায়ই ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসে, যা শ্বাসযন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ঠান্ডা কাশি শুধু শারীরিক অসুবিধাই সৃষ্টি করে না, বরং বাইক চালানোর সময় মনোযোগ নষ্ট করতেও পারে।তাই বাইক চালানোর সময় প্রয়োজন বিশেষ সতর্কতা।
প্রথমত, বিকাল বা সন্ধ্যার পরে অথবা খুব সকালে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়লে ভালো করে কান ও মাথা ঢেকে রাখতে হবে। হিমেল হাওয়া থেকে বাঁচতে গরম পোশাক পরতে হবে। হেলমেট তো পরবেনই, মাথায় হালকা টুপি পরে তার উপর হেলমেট পরুন। সঙ্গে শিশু থাকলে তার কান-মাথা ঢেকে রাখুন। গলায় হালকা স্কার্ফ জড়িয়ে নিলে ঠান্ডা লেগে যাবে না।
শীতের সময়ে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে। এ কারণে বাতাসে প্রচুর পরিমাণ ধূলা-বালি ধোঁয়া, বিভিন্ন রোগের জীবাণু মিশে থাকে, এ কারণে কেবল গরম পোশাক পরলেই হবে না, দূষিত বাতাস নাক-মুখ দিয়ে ঢুকে ফুসফুসে সংক্রমণ হতে পারে। তাই মাস্ক পরুন। সঙ্গে শিশু থাকলে তাকেও মাস্ক পরাতে হবে।
ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে আর্দ্রতাজনিত কারণে ঠোঁট, গাল, নাক, হাত, পা এক কথায় শরীরের আঢাকা অংশের চামড়ায় টান ধরে। ত্বক ফাটতে শুরু করে। বেশি ঠান্ডা বাতাস লাগলে ত্বক তাড়াতাড়ি শুষ্ক হয়ে যাবে। তাই এমন পোশাক পরুন যেন পুরো শরীর ঢাকা থাকে। হাতে-পায়ে ভালো করে ময়শ্চেরাইজার লাগিয়ে তারপর গরম পোশাক পরুন। গ্লাভস ও মোজা পরতে ভুলবেন না।
শীতে শরীলে পানির চাহিদা কম থাকায় পানি পানের পরিমাণ কমে যায়। তাই এই সময় পানিশূন্যতাও দেখা দিতে পারে। তাই বেশি করে পানি পান করুন। এতে শরীর খারাপ হবে না। সঙ্গে ফ্লাস্কে গরম পানি রেখে দিতে পারেন। যদি খুব লম্বা ভ্রমণ হয়, তাহলে মাঝে মাঝে গরম পানি পান করলে ঠান্ডা লাগবে না।
শীতে অ্যালার্জির সমস্যা বাড়ে। রাস্তার ধোঁয়া-ধূলা বা ঠান্ডা বাতাসে অ্যালার্জি বেড়ে যেতে পারে। যাদের অ্যালার্জি আছে তারা বাইকে ভ্রমণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বেশি ঠান্ডায় অনেকের শ্বাসের সমস্যা বা হাঁপানির টান ওঠে। সে ক্ষেত্রে সঙ্গে ইনহেলার রাখুন। ফার্স্ট এইড বাক্সে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রও নিয়ে নিন।
মানসিক চাপ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করতে পারে। তাই বাইকারদের মানসিক চাপ কমানোর জন্য নিয়মিত রিল্যাক্সেশন প্র্যাকটিস করা উচিত। ঘুম ভালো হলে শরীর ঠান্ডার বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
ঠান্ডা কাশি বাইকারদের জন্য একটি সাধারণ সমস্যা হলেও সঠিক প্রস্তুতি নিলে এটি সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। সঠিক পোশাক, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, এবং বাইকের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক যত্ন নেওয়া উচিত।
বাইকারদের জন্য শীতকাল একদিকে যেমন রোমাঞ্চকর, তেমনই স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ। সঠিক প্রস্তুতি ও সতর্কতা মেনে চললে ঠান্ডা-কাশি এড়িয়ে সুস্থভাবে যাত্রা করা সম্ভব।
আপনার মতামত লিখুন :