অক্টোবর মানেই শীতের আগমনী বার্তা। বছরের এই সময়ে আবহাওয়ার পরিবর্তন ত্বকের ওপর প্রভাব ফেলে। গরমকালের ঘাম, তেলতেলে ভাব এবং আর্দ্রতার পরিবর্তে আসে শীতের শুষ্কতা। তাই শীতের আগেই ত্বকের যত্নে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা জরুরি। গরমে ব্যবহৃত স্কিন কেয়ার প্রডাক্টগুলো শীতের জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে। ফলে আপনার স্কিন কেয়ার রুটিনকে পরিবর্তিত করে নিতে হবে। আসুন জেনে নেই কীভাবে গরম থেকে শীতে ত্বকের যত্নে পরিবর্তন আনা উচিত।
ক্লিঞ্জার পরিবর্তন করুন: গরমকালে সবাই সাধারণত জেল বা ফোমিং ক্লিঞ্জার ব্যবহার করে; যা ত্বকের অতিরিক্ত তেল ও ময়লা দূর করে। তবে শীতের সময় ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। তাই ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য মাইল্ড বা ক্রিম বেসড ক্লিঞ্জার ব্যবহার করা উচিত। এতে ত্বক পরিষ্কার থাকার পাশাপাশি আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
ময়েশ্চারাইজারে হেভি ফর্মুলা: শীতে ত্বক স্বাভাবিকভাবেই শুষ্ক হয়ে যায়। তাই ময়েশ্চারাইজার পরিবর্তন করা অপরিহার্য। গরমকালে হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলেও শীতে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে ভারি বা গভীরভাবে হাইড্রেটিং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। শিয়া বাটার বা হায়ালুরোনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার শীতের জন্য আদর্শ।
প্রয়োজন সানস্ক্রিন : শীতকালে অনেকে মনে করেন সানস্ক্রিন প্রয়োজন নেই। কিন্তু এটা একটা বড় ভুল। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি সারা বছরই ত্বকের ক্ষতি করে, তাই শীতেও সানস্ক্রিন ব্যবহারে অবহেলা করা উচিত নয়।
এক্সফোলিয়েশনে সংযম: গরমকালে ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে নিয়মিত এক্সফোলিয়েশন করা হলেও শীতে এটি কমিয়ে আনা উচিত। অতিরিক্ত এক্সফোলিয়েশন শীতকালে ত্বককে আরও শুষ্ক ও রুক্ষ করে তুলতে পারে। সপ্তাহে এক বা দুবার হালকা এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করাই যথেষ্ট।
সিরাম ব্যবহার করুন: ময়েশ্চারাইজারের পাশাপাশি শীতকালে ত্বককে আরও পুষ্টি দিতে সিরাম ব্যবহার করা যেতে পারে। ভিটামিন সি বা হায়ালুরোনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ সিরাম ত্বককে ভেতর থেকে ময়েশ্চারাইজ ও উজ্জ্বল করে। শীতের শুষ্কতা থেকে ত্বককে রক্ষা করার জন্য এটি একটি কার্যকর উপাদান।
লিপবাম এবং আই কেয়ার: শীতকালে ঠোঁট ও চোখের আশপাশের ত্বক সবচেয়ে বেশি শুষ্ক ও সংবেদনশীল হয়। তাই হাইড্রেটিং লিপবাম এবং আইক্রিম ব্যবহার করা উচিত। ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করার জন্য ময়েশ্চারাইজিং লিপবাম খুবই কার্যকর, এবং চোখের ত্বককে শুষ্ক ও কুঁচকে যাওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য আইক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে।
পানি পান কমাবেন না: শীতকালে ত্বককে হাইড্রেটেড রাখার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো পর্যাপ্ত পানি পান করা। ঠান্ডা আবহাওয়ায় আমরা পানি কম পান করি, কিন্তু ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে শীতকালেও প্রচুর পানি পান করা জরুরি।
নাইট কেয়ার রুটিন: শীতে ত্বকের যত্নে রাতের রুটিনকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। ঘুমানোর আগে ময়েশ্চারাইজার এবং সিরাম দিয়ে ত্বককে হাইড্রেট করে রাখুন। এতে রাতে ত্বক পুনর্গঠন হতে পারে এবং সকালে ত্বক কোমল ও উজ্জ্বল দেখাবে।
প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার করুন: শীতকালে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল বা আর্গান অয়েলের মতো প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো ত্বককে গভীর থেকে ময়েশ্চারাইজ করে এবং শুষ্কতা দূর করে।
হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন: শীতকালে ঘরের বাতাস শুষ্ক হয়ে যায়, যা ত্বকের শুষ্কতাকে বাড়িয়ে তোলে। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করলে ঘরের বাতাস আর্দ্র থাকবে এবং ত্বকের শুষ্কতাও কমবে।
শীত আসার আগেই ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকের প্রয়োজন অনুযায়ী স্কিন কেয়ার রুটিনে পরিবর্তন এনে ত্বককে সুরক্ষিত ও উজ্জ্বল রাখা সম্ভব। সঠিক যত্ন নিলে শীতেও আপনার ত্বক থাকবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও কোমল।
আপনার মতামত লিখুন :