জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রবীণ সদস্য, প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কবি এরশাদ মজুমদার আর নেই। গত রোববার রাত ১১টায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন)। তিনি ডায়াবেটিস ও হার্টের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় মরহুমের নামাজের জানাজা প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে।এরশাদ মজুমদার ১৯৪২ সালের ৬ জানুয়ারি ফেনীর উকিলপাড়ার মজুমদার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ফেনী কলেজ, জগন্নাথ কলেজ ও ঢাকা কলেজে লেখাপড়া করেন। ১৯৬১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন করেন। তিনি
তৎকালীন পাকিস্তান অবজারভারে অর্থনৈতিক প্রতিবেদকসহ দৈনিক সংবাদ, পূর্বদেশ, বাংলার বাণী, দৈনিক জনপদসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেন। তিনি এ দেশের অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।এরশাদ মজুমদার ১৯৭৮ সালে সাপ্তাহিক রিপোর্টারের প্রধান সম্পাদক, দৈনিক ফসল ও দৈনিক রিপোর্টারের সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি ডেইলি নিউজ এবং ডেইলি নিউ নেশন-এ ম্যানেজিং এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯৮ সালে সাংবাদিকতার পেশা থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
তিনি একজন সফল অনুবাদক। তিনি রুমি ও মনসুর হাল্লাজের কবিতা অনুবাদ করেছেন। জাতীয় প্রেস ক্লাব সদস্য কবিদের সংগঠন কবিতাপত্র পরিষদের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। সংগঠনের কবিতাপত্র নিয়মিত প্রকাশেও রয়েছে তাঁর অনন্য ভূমিকা। গল্প উপন্যাস কবিতা ছড়াসহ তার ১৪টি বই প্রকাশিত হয়েছে। তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে আছে- মায়ের চিঠি, কবিতার বই, ছড়ার বই, উপন্যাস নায়িকা, অনুবাদ নিজেকে বিবস্ত্র করে, কালো কবিদের কবিতা, ডিমের খোসায় পথচলা, আত্মার শব্দাবলী, ঢাকার ৫শ’ বছর, ৪৮ নম্বর তোপখানা রোড, তুর্কি কবিতার অনুবাদ, উপন্যাস নর-নারী ও রমণী, কৃষ্ণকথা, স্মৃতিকথা পিতা পুত্রকে। তার বিখ্যাত বই ‘বায়া দলিলের সন্ধানে’। বইটিতে লেখকের শ’দুয়েক কলাম সংযোজিত হয়েছে।
জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি হাসান হাফিজ ও সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া এরশাদ মজুমদারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আপনার মতামত লিখুন :