লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে নেই সহকারী কমিশনার (ভূমি)। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা।
দীর্ঘদিন পদটি শূন্য থাকায় জমি কেনাবেচা, নামজারি, ভূমি উন্নয়ন করসহ বিভিন্ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রমও থমকে গেছে।
উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি এসিল্যান্ড দিতী রায় বদলি হয়ে বিদেশে চলে যান। এরপর থেকে পদটি শূন্য রয়েছে। বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ভূমি অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
তবে, একাধিক দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে নিয়মিত ভূমি অফিস করা তার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের জনগণ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
ভুক্তভোগী গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘প্রায় দুই মাস আগে নামজারির আবেদন করেছিলাম, এখনো অগ্রগতি হয়নি। কেউ বলতে পারছে না কবে নাগাদ এটি সম্পন্ন হবে। শুধু সাধারণ জনগণই নয়, দলিল লেখকরাও ভূমি অফিসের সেবা বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন।’
এক দলিল লেখক বলেন, ‘প্রতিদিন প্রচুর জমি কেনাবেচা হয়। কিন্তু নামজারি, বাটোয়ারা এবং খাজনা পরিশোধ ছাড়া জমি হস্তান্তর করা যায় না। এসিল্যান্ড না থাকায় এসব কাজ আটকে আছে।’
কালীগঞ্জে উপজেলা ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘উপজেলার অধীনে ৭টি সহকারী ভূমি অফিস রয়েছে, যা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দ্বারা পরিচালিত হয়। কিন্তু এসিল্যান্ড না থাকায় এসব অফিসেও ভূমি সংক্রান্ত সেবা ব্যাহত হচ্ছে।’
ভোটমারী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা অতুল চন্দ্র রায় বলেন, ‘দুই মাস ধরে এসিল্যান্ড না থাকায় নামজারি ও জমাখারিজের কাজ ধীরগতিতে চলছে। সেবাগ্রহীতারা ঠিকমতো সেবা পাচ্ছেন না, তাদের বোঝানোও কঠিন হয়ে পড়ছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কালীগঞ্জের সব ভূমি অফিসেই উপজেলা সহকারী কমিশনারের মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করতে হয়। সেবাপ্রার্থীরা নিয়মিত সেবা পাচ্ছেন না।’
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে কর্মকর্তা পদায়ন করতে জেলা প্রশাসককে অফিসিয়ালি জানানো হয়েছে। বর্তমানে ভূমি অফিসের সেবা কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয়, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।’
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ শিগগিরই উপজেলায় সহকারী কমিশনারের (ভূমি) পদায়ন করবেন বলে তিনি আশাবাদী।
