বিভিন্ন সূত্র মতে, দেশে গৃহকর্মীর সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ, যার বেশিরভাগই অপ্রাপ্তবয়স্ক। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ কর্মসূচি নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস. মুরশিদ। তিনি বলেন, গৃহকর্মীদের জীবনমান উন্নয়নে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ন্যূনতম শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরি। তাদের জন্য একটি কর্মসূচি নেওয়া প্রয়োজন, যা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনা যেতে পারে।
রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে গণসাক্ষরতা অভিযানের আয়োজনে, অক্সফাম ইন বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় আয়োজিত ‘গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও জীবনমান উন্নয়ন’ বিষয়ক এক নীতি সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান ও বিলস-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান ও নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভীন হক এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনায় প্রথমেই মন-মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। গৃহশ্রমিকদের ন্যূনতম সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। শ্রম মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে একটি অভিযোগ কেন্দ্র ও কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিতে পারে, যেখানে গৃহকর্মীরা তাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন এবং দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে সূচনা বক্তব্যে কর্মসূচির প্রেক্ষাপট ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক তপন কুমার দাশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কর্মরত গৃহশ্রমিকরা নানা ধরনের কাজে নিয়োজিত। তাদের সুরক্ষা ও জীবনমান উন্নয়নের জন্য নীতি-নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান, ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন, শিশুদের শিক্ষায় সহায়তা, গৃহশ্রমিকদের তথ্য সংগ্রহে জরিপ পরিচালনা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ সেল গঠন এবং আবাসন ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
এই নীতি সংলাপে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, অক্সফাম ইন বাংলাদেশের ইডব্লিউসিএসএ কর্মসূচির অংশীদার সংগঠনসমূহ, গণমাধ্যমকর্মী, গণসাক্ষরতা অভিযান কাউন্সিল প্রতিনিধি, এডুকেশন ওয়াচের প্রতিনিধি এবং নারী গৃহকর্মীসহ প্রায় ৭০ জন অংশগ্রহণ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :