ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫

আম বিক্রিতে ব্যবসায়ীদের ‘ঠকবাজি’

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০২৫, ০৪:০৩ পিএম
আম সাজিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন এক ব্যবসায়ী। ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে পাকা আমের স্তূপ। এখান থেকে ঠিকরে পড়ছে হলুদ, হালকা সবুজ বা উজ্জ্বল কমলা রঙের আম। যা দেখেই দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন ক্রেতারা।

কেউ হাতে তুলে নিচ্ছেন, কেউ বা গন্ধ শুঁকছেন। তারা বলছেন, মৌসুমের আগেই এত সুন্দর আম কীভাবে? 

ক্রেতার এমন প্রশ্নের উত্তরে বিক্রেতারা বলেন, ‘মামা একবার নিয়েই দেখেন, কড়া মিষ্টি হইবো’। কিন্তু বাড়ি ফিরেই দেখা যায়, এখনো আমের ভেতরটা অপরিপক্ব, শক্ত, ফ্যাকাশে এবং স্বাদটা পানসে। আমের চকচকে রূপের আড়ালে লুকিয়ে থাকে এক ভয়াবহ ঠকবাজির গল্প।

সম্প্রতি রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মিরপুর, উত্তরা, খিলক্ষেত, নিউমার্কেট ঘুরে দেখা যায়, সব বাজারেই অপরিপক্ব আমে ভরে গেছে। বিভিন্ন জাতের বিক্রি হওয়া এসব আমের আসল স্বাদ মিলছে না।

আবার অধিকাংশ দোকানে কাটিমন, গোপালভোগ জাতের আমের পরিমাণই বেশি। এর মধ্যে আবার আকার-আকৃতি ভেদে দাম নির্ধারিত হচ্ছে। 

এখন দাম অনেক বেশি। একটু বড় আকারের কাটিমন আম বিক্রি করা হচ্ছে ১৬০ টাকায়। আর গোপালভোগ মান ও আকৃতি ভেদে বিক্রি করা হচ্ছে ১৩০-১৮০ টাকায়।

তবে আমের সহজলভ্যের কথা জানতে চাইলে দোকানিরা বলেন, এসব আম আগাম জাতের। আবার অতিরিক্ত লাভের আশায় কাঁচা আম পেড়ে রাসায়নিক প্রয়োগ করে পাকানো হয়েছে।

কোনো কোনো বিক্রেতা বলেন, খরা পরিস্থিতি, কালবৈশাখী ঝড় কিংবা দমকা বাতাসে যেসব আম ঝরে পড়ছে, সেসব আমই বাজারে ছাড়া হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, আমের বাইরের রং ঠিক থাকলেও ভেতরের স্বাদ মিষ্টি হয়নি।

নুরুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, বাইরে দেখে মনে হলো একেবারে পাকা। সে জন্য কিনলামও দাম দিয়ে। কিন্তু কেটে দেখি, ভেতরে কিছু হয়নি। পুরো টাকাটাই নষ্ট হয়েছে। বাইরে দিয়ে দেখতে সুন্দর, কিন্তু মিষ্টির ছিটেফোঁটাও নেই।

মৌসুমের আগে আমের সহজলভ্যতা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন করলে তারা বলেন, প্রাকৃতিকভাবে বা স্বাভাবিক নিয়মে একটি আম পাকতে সময় লাগে ১৫ থেকে ৩০ দিন। গাছের পুষ্টি ও রোদ-বৃষ্টির সহায়তায় ফলের মধ্যে গ্লুকোজ, সুগার ও নানা স্বাদ উপাদান তৈরি হয়। সেই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় জন্ম নেয় মিষ্টি স্বাদ, মোলায়েম টেক্সচার আর ঘ্রাণ। তবে কাঁচা আম পাকাতে ব্যবহার করা হয় রাসায়নিক।

তারা আরও বলেন, ক্যালসিয়াম কার্বাইড এবং ইথিফন নামের রাসায়নিক বর্তমানে বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। যাতে পাকস্থলি, অন্ত্রের জটিল রোগ, স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি, শ্বাসকষ্ট ও ক্যানসারের ঝুঁকির মতো নানা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।