ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫

বিদেশে যাওয়া হলো না শাকিলের

নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০২৫, ০৪:৫১ পিএম
ফাইল ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ইয়াছিন আরাফাত ওরফে শাকিল (২৮) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তিন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে দু’জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এবং গুরুতর আহত আরেক জনকে পুলিশ হেফাজতে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  

গ্রেপ্তাররা হলেন, উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের ধীতপুর গ্রামের খোকনের ছেলে মোরশেদ আলম (২৫), একই গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মো. জীবন (২৪) ও মো. মনির (২২)।  

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে বেগমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবীবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে, সোমবার ২৮ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গাবর বাজারের ইসলামীয়া মার্কেটর সামনে এ ঘটনা ঘটে।  

নিহত শাকিল একই গ্রামের মো. সোলাইমান খোকনের ছেলে। তিনি পেশায় থাই অ্যালুমিনিয়াম মিস্ত্রি ছিলেন। পাশাপাশি একটি চা দোকান চালাতেন।   

স্থানীয়রা জানান, রাত ৮টার দিকে শাকিলসহ কয়েকজন ছয়ানীর গঙ্গাবর বাজারের ইসলামীয়া মার্কেটের একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। ওই সময় এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে পাঁচ জন অস্ত্রধারী এসে লাবিব নামে এক তরুণকে জোরপূর্বক তুলে নিতে চেষ্টা করে। তখন শাকিলসহ আরও কয়েকজন বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা শাকিলকে গুলি করে। 

এ সময় তার ছোট ভাই শুভকে (২৫) কুপিয়ে জখম করে। তাৎক্ষণিক এলাকার লোকজন দুই ভাইকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শাকিলকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে স্থানীয় লোকজন অস্ত্রধারী তিন সন্ত্রাসীকে আটক করে গণধোলাই দেন।  

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, কিছু দিন আগে শাকিল সৌদি আরব যাওয়ার জন্য ঢাকায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে আসেন। জীবিকার তাগিদে আগামী মাসের ২ মে তার সৌদি আরব যাওয়ার ফ্লাইট ছিল। তার ৭ মাস বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। এক তরুণকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে পুরো পরিবারের স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়ে গেছে। নিহতের স্বজনেরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্ত্রাসীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।  

বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবীবুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি বুলেট উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা ডোবাতে সেচ মেশিন বসিয়ে পানি শুকিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। তবে সেখানে কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি। 

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার আসামিরা গণপিটুনির শিকার হওয়ার পুলিশ পাহারায় তাদের চিকৎসা দেওয়া হচ্ছে। লাশ দাফন শেষে এ ঘটনায় নিহতের স্বজনেরা মামলা দায়ের করবেন। পুলিশ তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে।