লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে যথাযথ মর্যাদা ও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দিবসটি যথাযোগ্যভাবে পালনের লক্ষ্যে দূতাবাসের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে, লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার দূতাবাস প্রাঙ্গণে নির্মিত শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এরপর তিনি দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে অর্ধনমিত করেন। পরে শহিদ মিনারটি সকল স্তরের প্রবাসীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, যাতে বাংলাদেশ কমিউনিটি স্কুল ও কলেজের কার্যকরী পরিষদ, শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী, বাংলাদেশ কমিউনিটি ক্লাব এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা পর্যায়ক্রমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় দূতাবাস প্রাঙ্গণে "আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি"— কালজয়ী গানটি বাজতে থাকে, যা অনুষ্ঠানে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে। এছাড়া, দিবসটি উপলক্ষে দূতাবাসের হলরুমে একুশে ফেব্রুয়ারির ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র "জুলাই অনির্বাণ" প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে রাষ্ট্রদূতের সভাপতিত্বে দূতাবাসের হলরুমে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। দূতাবাসের কর্মকর্তারা এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ দিবসটির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন।
সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ এবং জুলাই ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের সকল শহিদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, বাঙালি জাতির মুক্তির সংগ্রামের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলন এক অনন্য প্রেরণা। এটি আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এবং এর গুরুত্ব অপরিসীম।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, যেকোনো জাতির মাতৃভাষা তার সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। বাংলা ভাষাকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিতে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে বাংলা ভাষা শুদ্ধভাবে শেখার ও আত্মস্থ করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি সাম্য, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনসহ সকল প্রকার বৈষম্য দূর করে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ভাষা আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল শহিদের আত্মার মাগফিরাত, বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতি ও উন্নতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :