গ্রামীণ ব্যাংকের ওপর থেকে সরকারের একক কর্তৃত্ব ঝেড়ে ফেলতে গ্রামীণ ব্যাংক (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। অধ্যাদেশে সরকারের মালিকানা ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। ৯০ শতাংশ রাখা হয়েছে ব্যাংকের সুবিধাভোগীদের জন্য।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নতুন এ অধ্যাদেশ জারি হলে সরকার ব্যাংকটিতে শুধু দু’জন পরিচালক নিয়োগ দিতে পারবে। এর বাইরে সব ক্ষমতা বোর্ডের হাতে ন্যস্ত হবে। এ ছাড়া গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকানায় সরকারের অংশ কমে ঋণগ্রহীতাদের মালিকানার পরিমাণ বাড়বে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, এখানে গ্রামীণ ব্যাংক আগে যখন কাজ করত, একটা মূল্যবোধ নিয়ে কাজ করত। সেই মূল্যবোধ হচ্ছে, যারা গ্রামীণ ব্যাংকের সুবিধাভোগী, তাদেরই অংশগ্রহণ থাকবে ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে। কিন্তু আমাদের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদকে রাজনৈতিকভাবে টার্গেট করা হয়েছিল। গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকানায় তার যে দর্শন ছিল— যে ঋণ নেবে তার হাতেই সুবিধা থাকবে, সেখান থেকে সরিয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশে নিয়ে আসা হয়।
‘আজকে যে অধ্যাদেশ সংশোধন করা হলো, তার মাধ্যমে আগে গ্রামীণ ব্যাংক ভূমিহীনদের জন্য কাজ করত, এখন বিত্তহীনদের একটা সংজ্ঞা সংযোজন করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পরিসর থেকে বেরিয়ে সিটি করপোরেশন, পৌরসভাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে’, বলেন তিনি।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, অধ্যাদেশে বোর্ডের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে—যারা এ ব্যাংকের সুবিধাভোগী, তাদের মধ্য থেকে ৯ জন নির্বাচিত হয়ে আসবেন। এ ৯ জনের মধ্য থেকে আবার ৩ জন মনোনীত হবেন। তাদের মধ্যে থেকে একজন চেয়ারম্যান নিযুক্ত হবেন। এখানে আরেকটি বিষয় হচ্ছে— পরিশোধিত মূলধন আগে ছিল সরকারের ২৫ শতাংশ, আর সুবিধাভোগীদের ৭৫ শতাংশ। এখন হয়ে গেছে ১০ শতাংশ এবং ৯০ শতাংশ।
এ ছাড়া ‘ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট ২০১৫’ অনুসারে গ্রামীণ ব্যাংককে জনস্বার্থ সংস্থা হিসেবে বিবেচনা করার একটা বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
আপনার মতামত লিখুন :