ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
বিদ্যুৎ খাত

‘গত ১৫ বছরে লুটপাট ১ লাখ কোটি টাকা’

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৪, ১০:৪৮ এএম

‘গত ১৫ বছরে লুটপাট ১ লাখ কোটি টাকা’

ছবি: সংগৃহীত

গত বছর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত চার দফায় বিদ্যুতের দাম বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। যার মাসুল গুনতে হচ্ছে সাধারণ ভোক্তাকে। ক্যাপাসিটি চার্জের নামে গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ খাতে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে, যার সিংহ ভাগই গেছে আওয়ামী লীগ সরকারঘনিষ্ঠ বিভিন্ন কম্পানির ভাণ্ডারে। প্রতিযোগিতা এড়িয়ে, যেমন খুশি তেমন দামে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিক্রির মাধ্যমে লুটপাট হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। কেবল ২০২২ সালেই বিদ্যুৎ খাতে লোপাট হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী হলে ক্যাব আয়োজিত ‘লুণ্ঠন প্রতিরোধে জ্বালানি খাত সংস্কার চাই’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম।

তিন বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম না বাড়ানোর আহবান জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন কম্পানি সামিট পাওয়ার ও ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি বাতিলেরও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, জ্বালানি খাতের ‘লুণ্ঠনমূলক ব্যয়’ পরিহার করতে না পারলে ভোক্তা তার জ্বালানি অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। বিগত সরকার জ্বালানি খাতে যে অলিগার্ক করে গেছে, বর্তমানে যাঁরা এখনো জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁরাও সেই অলিগার্ক গ্রুপেরই লোক। তাই জ্বালানি খাতের উন্নয়নে সেই অলিগার্কদের দ্রুত সরিয়ে দিতে হবে।

অন্তত তিন বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম না বাড়ানোর আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, জ্বালানি খাতের উন্নয়নের জন্য বর্তমান সরকারকে দুই-তিন বছর সময় দিতে হবে। আর ‘লুণ্ঠনমূলক ব্যয়’ পরিহার করতে চাইলে সামিট-আদানির মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জ্বালানি খাতের বেশ কিছু সংস্কারের দাবি তুলে ধরে ক্যাব। তেলের দাম ঠিক করতে সদ্য সাবেক সরকারের পথে না হাঁটার আহবান জানায় সংগঠনটি।

শামসুল আলম বলেন, ‘যেসব ব্যয় সংযোজন করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তার সব কিছুই তারা আড়াল করেছে এবং আড়াল করে যাচ্ছে এখন পর্যন্ত। যারা আড়াল করেছে তারা অলিগার্ক। এই অলিগার্ক নিয়ন্ত্রণ সরকারের জন্য ভয়ংকর রকমের চ্যালেঞ্জিং। যদি আমরা সরকারের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হই তাহলে সরকারও ব্যর্থ হবে।’

এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে মোট ১১টি দাবি তুলে ধরা হয়। তিন বছরের মধ্যে বিদ্যুতের দাম না বাড়ানো ছাড়া অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০ বাতিল এবং প্রতিযোগিতাবিহীন বিনিয়োগ ও ক্রয়-বিক্রয় আইন করে নিষিদ্ধ করা; বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসির অধীনে ‘জ্বালানি খাত সংস্কার কমিশন’ গঠন, বিইআরসিতে নিয়োগে পরামর্শ দিতে সার্চ কমিটি গঠন ইত্যাদি।

সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয়ে বিশ্লেষণ করেন ক্যাবের আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবির ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মিজানুর রহমান।

আরবি/জেআই

Link copied!